নড়াইল: সবাই যখন কোরবানির ঈদের জন্য পশু, টিভি-ফ্রিজসহ নতুন জামা-কাপড় কেনায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে, ঠিক তখনই জীবন বাঁচাতে ভিটে-মাটি ছেড়ে, কেউবা বসত-বাড়ির ভেঙে, আবার কেউ শেষ সম্বলটুকু রক্ষা করতে জীবন বাজি রেখে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আনন্দ তো দূরের কথা, ঈদ যেন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নবগঙ্গা নদীপাড়ের শুক্তগ্রামের নদী ভাঙন কবলিত বাসিন্দাদের কাছে বিষাদে ভরা একটি দিন। এখানে নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক বসত-বাড়িসহ ফসলি জমি। এবার ঈদ আসছে এ এলাকার মানুষের কাছে কষ্টের বার্তা নিয়ে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিলীন হয়ে যাচ্ছে একের পর এক বসতবাড়িসহ নানা স্থাপনা। সময় মতো ভাঙনরোধে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করার অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। নদী ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। এতে চরম আতঙ্কে দিন পার করছে স্থানীয়রা।
স্থানীয় লিমা বেগম বলেন,‘নদী ভাঙনের কবলে পড়ে আমাদের বাড়ি-ঘর সবকিছু বিলীন হয়ে গেছে। কোনো রকম জীবন নিয়ে বেঁচে আছি।’
আকবার খান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে সময় মতো ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ কারণে এখন প্রতিদিনই নতুন করে নদী ভাঙছে।’
হাসান শিকদার বলেন, ‘আমার বসত-বাড়িসহ এক বিঘা ফসলি জমি নদী ভাঙনে চলে গেছে। নিঃস্ব হয়ে এখন আমি পথের ফকির হয়ে গেছি। আমার আবার কিসের ঈদ?’
বাবরা হাছলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন পিকুল বার্তা২৪.কমকে জানান, যেভাবে ভাঙন চলছে, এতে আশপাশের গ্রামগুলোও ভাঙনের মুখে রয়েছে। অবিলম্বে ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ নেওয়াজ তালুকদার বার্তা২৪.কমকে জানান, ইতোমধ্যে দুই শতাধিক পরিবারের বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি বার্তা২৪.কমকে জানান, নবগঙ্গা নদী ভাঙন প্রতিরোধে ইতোমধ্যেই ৪৪৫ মিটার এলাকায় বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। আগামী শুষ্ক মৌসুমে ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।