ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার একটি কচুক্ষেতে লাভলী আক্তার (৩০) নামে এক গার্মেন্টসকর্মীর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ঘাতক রাজাবালীকে (৪৫) আটক করতে সক্ষম হয়েছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
শুক্রবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, প্রায় ছয় মাস আগে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে রাজাবালীর সঙ্গে পরিচয় ঘটে লাভলীর। এরপর প্রেম ও একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও হয় তাদের মধ্যে। অনেকদিন ধরেই বিয়ের জন্য চাপ দিয়ে আসছিল লাভলী। তবে শারীরিক সম্পর্ক হলেও বিয়ে করতে নারাজ ছিল লম্পট প্রেমিক রাজাবালী। প্রথমবার ভালোভাবে প্রেমিকাকে ফেরত পাঠালেও দ্বিতীয়বার গত ৯ জুন বিয়ে করবে বলে ফের ডেকে এনে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাভলী আক্তারের বিবস্ত্র মরদেহ ফেলে রাখে একটি কচুক্ষেতে।
ডিবির ওসি আরও জানান, পরদিন সকালে সেই মরদেহ উদ্ধারের পর অভিযানে নামে ডিবি পুলিশ। ওই নারীর সঙ্গে থাকা একটি ভ্যানিটি ব্যাগের ভেতরে কাগজে লিখা একটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পরদিন নিহতের পিতা ফুলবাড়িয়া থানায় একটি মামলা করেন। শুরু থেকেই পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখা তদন্ত করে। এছাড়াও বিভিন্ন সংস্থা মাঠে কাজ করতে থাকে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ টানা প্রায় ৪৮ ঘণ্টা মাঠে থেকে তথ্যানুসন্ধান চালিয়ে ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল ঘাতককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক রাজাবালী হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে জানিয়ে শাহ কামাল আকন্দ বলেন, অভিযুক্তকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রাজাবালীর স্ত্রীসহ তিন সন্তান রয়েছে। প্রায় ২০ বছর আগে সে বিয়ে করেছে। অপরদিকে লাভলী আক্তারেরও আগে একটি বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বছর দুয়েক ধরে গাজীপুর কোনাবাড়িতে ভাড়া বাসায় থেকে গার্মেন্টেসে কাজ করতো। ওই সংসারে ৭ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতি থানার ছিন্নাই পাড়া গ্রামে।