দক্ষিণ এশিয়ায় করোনার ভয়াল থাবা, বিপদ বাড়ছে

, জাতীয়

ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম  | 2023-08-28 05:50:00

তথ্যগুলো ভীতিকর হলেও নির্মম সত্য। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশও এমন পরিস্থিতিতে চরম বিপদের মুখে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আক্রান্তের তালিকার শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। ব্রাজিল আছে দ্বিতীয় স্থানে। তারপর আছে যথাক্রমে ভারত, পাকিস্তান, চিলি, সৌদি আরব। তারপরই সপ্তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পর অষ্টম স্থানে রয়েছে মেক্সিকো।

উদ্বেগজনক খবর হলো, বাংলাদেশ আক্রান্তের সংখ্যায় চীনকে অতিক্রম করেছে। আর ভারত পেছনে ফেলে এসেছে ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যকে।

প্রতিমুহূর্তে এসব পরিসংখ্যান বদলাচ্ছে। বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এক দেশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে আরেক দেশকে।

বাংলাদেশে যে বর্তমানে করোনার ভয়ঙ্কর প্রকোপের সম্মুখীন, তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। মার্চে প্রথম আক্রান্ত শনাক্তের পর এই জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির রেকর্ড হচ্ছে প্রতিদিনই। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি মারা গেছেন অনেক ভিভিআইপি ও বিশিষ্টজন।  

বিশ্বে করোনা সংক্রমণের যে চিত্র, তাতে তিন রকমের পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। প্রায় সব দেশই ভাইরাসটি দ্বারা চরমভাবে আক্রান্ত হলেও কিছু কিছু দেশ তা হটিয়ে রেখেছে। নিউজিল্যান্ড, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, কিউবা, জাপান প্রভৃতি দেশে করোনায় ক্ষয়ক্ষতি নেই বললেই চলে। প্রতিষেধক না পেয়েও সুচিন্তিত পরিকল্পনা ও কর্মসূচির মাধ্যমে করোনা মোকাবিলা করেছে দেশগুলো।

দ্বিতীয়ত দেখা যাচ্ছে চীন, ইতালি, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশগুলোকে। যে দেশগুলো মারাত্মকভাবে করোনায় আক্রান্ত হয়েও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আক্রান্ত ও মৃত্যের সংখ্যা কমিয়ে এনে দেশগুলো স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালু করতেও সক্ষম হয়েছে।

বাকি দেশগুলোকে তৃতীয় ভাগে রাখা যায়, যারা করোনার দ্বারা আক্রান্ত হয়ে লড়ছে বটে, কিন্তু রোগটিকে সামলিয়ে ইতিবাচক উত্তরণ ঘটাতে পারছেনা। এজন্য দেশগুলোর স্বাস্থ্যসেবা খাতের বেহাল দশা ও সামাজিক নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে শৈথিল্য ও দোদুল্যমানতা দায়ী। 

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো এই পর্যায়ভুক্ত। এখানে করোনার বিরুদ্ধে মজবুত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গঠন ও কঠোর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছেনা, যা করোনা সংক্রমণের অন্যতম প্রধান কারণ। অনেক দেশ কারফিউ দিয়ে বা সামাজিক দূরত্ব ও বিধি পালন না করলে কঠোর শাস্তি দিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনলেও দক্ষিণ এশিয়ায় তা হচ্ছেনা।

দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশেই এক রকমের ফ্রিস্টাইল অবস্থা চলছে। মানুষের এক বিরাট অংশ বিকারহীন। নীতিগত দিক থেকেও কঠোর পদক্ষেপ অনুপস্থিত। ফলে করোনার সামাজিক বিস্তার ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে চূড়ান্ত আকার ধারণ করছে।

ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। দেশগুলো চলে আসছে করোনা আক্রান্ত তালিকার শীর্ষের দিকে। এই চলমান বাস্তবতায় বিদ্যমান নীতি ও কৌশল পুনঃপর্যালোচনা করে জনস্বার্থে ও ও জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। নচেৎ বিপদ আরো বাড়বে বৈ কমবে না!    

এ সম্পর্কিত আরও খবর