করোনায় লোকসানে মানিকগঞ্জের মরিচ চাষিরা

, জাতীয়

খন্দকার সুজন হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিতগঞ্জ | 2023-08-24 14:30:40

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দীর্ঘ দিন বন্ধপ্রায় বিমান চলাচল। এতে করে বন্ধ হওয়ার পথে কাঁচা মরিচের রফতানি বাজারও। যার প্রভাব পড়েছে মানিকগঞ্জের পাইকারি কাঁচা মরিচের বাজারে। বাম্পার ফলনের পরও চাহিদা অনুযায়ী বাজারদর না থাকায় লোকসানে এ জেলার মরিচ চাষিরা।

মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলার প্রতিটি উপজেলাতেই কমবেশি আবাদ হয়েছে কাঁচা মরিচের। তবে জেলার ঘিওর, হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ সদর ও দৌলতপুরে মরিচের আবাদ হয়েছে বেশি। অনুকূল আবহাওয়া আর উত্তম পরিচর্যায় চলতি মৌসুমে মরিচের ফলনও হয়েছে ভালো। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বাজারে রফতানি হচ্ছে মানিকগঞ্জের কাঁচামরিচ।

তবে করোনাভাইরাসের কারণে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় প্রায় শূন্যের কোটায় মানিকগঞ্জের কাঁচা মরিচের রফতানি বাজার। নামে মাত্র অল্প কিছু মরিচ পাঠানো হচ্ছে বিদেশের বাজারে। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। যার প্রভাব পড়েছে স্থানীয় হাট-বাজারে। এতে করে লোকসানে রয়েছে মানিকগঞ্জের মরিচ চাষিরা।

ক্রেতা কম থাকায় কমেছে মরিচের দাম

সোমবার (১৫ জুন) সকালে সরেজমিনে জেলার শিবালয় উপজেলার বরংগাইল কাঁচামরিচের পাইকারি বাজারে বস্তা বোঝাই মরিচ নিয়ে বিক্রির অপেক্ষায় প্রহর গুনতে দেখা যায় শতাধিক চাষিকে। চাহিদার চেয়ে আমদানি বেশি হওয়ায় মরিচ ক্রয়ে অনিহা ব্যবসায়ীদের। এতে করে প্রাপ্য মুনাফা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে বলে দাবি চাষিদের। আর দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বাজারে চাহিদা কম থাকায় মরিচ ক্রয়ে অনিহা বলে জানান পাইকারেরা।

স্থানীয় কৃষক জসিম মিয়া জানান, মানিকগঞ্জের পাইকারি বাজারে মরিচের চাহিদা থাকায় প্রতি বছরের ন্যায় চলতি মৌসুমেও তিন বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করেছেন তিনি। মরিচের ফলনও হয়েছে ভালো। তবে পাইকারি বাজারে মরিচের চাহিদা কম থাকায় প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ১৮ টাকায়। অপরদিকে মরিচের বাজারজাত ও শ্রমিকের খরচ বেশি। সবমিলিয়ে চলতি মৌসুমে মরিচ চাষাবাদে লোকসান গুনতে হবে হবে তাকে।

জিকির উল্লাহ নামে এক ব্যবসায়ী জানান, কাঁচা মরিচের মৌসুমে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ টন মরিচ দোহা, কুয়েত, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করেন তাদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। এরকম আরও ৪/৫ টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান রয়েছে বরংগাইল বাজারে। তবে বিমান বন্ধ থাকায় এখন প্রতিদিন সব মিলিয়ে বরংগাইল বাজার থেকে খুব বেশি হলে এক টন মরিচ রপ্তানি করা হয়। যে কারণে মরিচ ক্রয়ে তাদের আগ্রহ নেই বলে জানান তিনি।

মরিচের চাহিদা কমে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের

বরংগাইল পাইকারি মরিচ বাজারের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক বার্তা২৪.কম-কে জানান, প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ টন মরিচের আমদানি হয় বরাংগাইল বাজারে। এখান থেকে ৩২ জন আড়তদার মরিচ কিনে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠান। তবে বিমান চলাচল সীমিত হয়ে যাওয়ায় বিদেশের বাজারে মরিচ রফতানি করা যাচ্ছে না। যে কারণে চাহিদা কমেছে মরিচের। আর এতে করে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের।

মানিকগঞ্জ কৃষি অধিদফতরের উপ-পরিচালক শাহজাহান আলী বিশ্বাস জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ৯১১ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো।

তবে মরিচের চলতি বাজারদর এবং বিদেশে মরিচ রফতানির বিষয়ে তার জানা নেই বলে জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর