লক্ষ্মীপুরে বিক্রি হচ্ছে টিসিবি পণ্য, জানেন না অনেকেই!

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর | 2023-08-25 01:48:35

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার উপকণ্ঠে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে টিসিবির পণ্য বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। তবে পৌর শহর থেকে দূরের ওয়ার্ডগুলোতে টিসিবির পণ্য পৌঁছাচ্ছে না। এতে সেসব এলাকার মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। আবার অনেকেই টিসিবি পণ্য বিক্রির বিষয়টিই জানেন না। সাধারণ ক্রেতাদের দাবি, প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়ে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হলে নিন্মআয়ের মানুষগুলো উপকৃত হবে। টিসিবি পণ্য বিক্রিতে সামঞ্জস্যতা ফিরতো।

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কৃষক আবদুর রহিম ও নির্মাণ শ্রমিক আবুল কালাম জানান, তাদের বাড়ি থেকে দালাল বাজার কাছে। ওই বাজার থেকেই তারা কেনাকাটা করেন। লক্ষ্মীপুর শহরে তাদের যেতে হয় না। কম দামে সরকারি পণ্যও তারা কিনতে পারেন না। একই অভিমত ব্যক্ত করেছেন পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফারুক হোসেন। তার বাড়ি থেকে জকসিন বাজার কাছে এজন্য তাকেও লক্ষ্মীপুর শহরে কেনাকাটা করতে যেতে হয় না। টিসিবি পণ্য বিক্রি কোথায় হচ্ছে সেটি জানেন না তারা।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার বনি আমিন জানান, প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে গিয়ে টিসিবি পণ্য বিক্রির বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু করোনাকালীন সময়ে সেটি সম্ভব নয়। পণ্য কিনতে এসে মানুষজন গাদাগাদি অবস্থার সৃষ্টি করে। এছাড়া ওয়ার্ড ভিত্তিক পণ্য বিক্রি করতে গেলে খোলা স্থানের অভাব রয়েছে। এতে করোনা ঝুঁকি বেড়ে যাবে।

বনি আমিন আরও জানান, দুটি গাড়িতে করে টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। একটি জেলা স্টেডিয়ামে রেখে পণ্য বিক্রির কাজ অব্যাহত রয়েছে। অন্যটি বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চালাচ্ছে। পৌরসভার প্রত্যেক ওয়ার্ডের মানুষই শহরে আসেন। টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাক থেকে তারা সরকারি নির্দিষ্ট দামে পণ্য কিনতে পারবেন।

জানা গেছে, পরিবেশকের দায়িত্ব নেওয়ার অভাবে প্রায় ৫ বছর লক্ষ্মীপুরে টিসিবির পণ্য বিক্রি বন্ধ ছিল। তবে করোনাকালীন সময়ে ‘নিউ ত্রয়ী শখ ও এম এ ট্রেডার্স’ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান এ দায়িত্ব নিয়েছে। গত ১৪ মে থেকে তার পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু করে। অব্যাহত রয়েছে তাদের কার্যক্রম। এতে নিম্নআয়ের মানুষগুলোর ৮০ টাকায় প্রতি কেজি সয়াবিন তেল, ৫০ টাকায় প্রতি কেজি চিনি ও ৫০ টাকা প্রতি কেজি মসুর ডাল কিনতে পারেন। শুক্রবার ও শনিবার পণ্য বিক্রি বন্ধ থাকে। বাকি দিনগুলোতে একটি ট্রাক জেলা স্টেডিয়াম এলাকায় রেখে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। অন্য একটি ট্রাকে করে পর্যায়ক্রমে শহরের ঝুমুর, আদর্শ সামাদ স্কুল, চক-বাজার ও লিল্লাহ মসিজদ এলাকায় পণ্য বিক্রি করা হয়।

টিসিবির পণ্য পরিবেশক নিউ ত্রয়ী শখের স্বত্ত্বাধিকারী সৈয়দ এহতেশাম হায়দার বাপ্পী বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা পণ্য বিক্রির কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। একটি ট্রাকে করে স্টেডিয়াম এলাকায় অবস্থান করে পণ্য বিক্রি করা হয়। অন্য একটি ট্রাক দিয়ে শহরের ৪টি স্থানে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীপুরে টিসিবির পণ্য বিক্রির জন্য ১২ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়। তারা বিভিন্ন অজুহাতে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে টিসিবির কোন পণ্য বিক্রি করেননি। তাছাড়া কেউ তাদের নিবন্ধন নবায়নও করেননি। এতে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ ন্যায্য মূল্যে টিসিবির পণ্য ক্রয় থেকে বঞ্চিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর