নাটোরে কৃষক হত্যার রহস্য উদঘাটন

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নাটোর | 2023-08-29 15:41:33

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের ইকরী গ্রামের বেড়ি বিলে গরু চড়াতে গিয়ে প্রথমে নিখোঁজ ও পরে মরদেহ উদ্ধার হওয়া কৃষক মোবারক আলী (৩৮) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। আরিফা খাতুন নামের এক গৃহবধূর সঙ্গে কৃষক মোবারক ও তার তিন বন্ধুর অবৈধ সম্পর্কের ঘটনা জানাজানির বিষয়টির জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

শুক্রবার (১৯ জুন) দুপুরে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৬ জুন ইকরী গ্রামের সীমান্তবর্তী গুরুদাসপুর উপজেলার সোনাবাজু গ্রামের কাঁচু খাঁর স্ত্রী আরিফা খাতুন (৩০), ইমরুল প্রাংয়ের ছেলে রশিদ প্রাং (৩৮), জিয়াউর রহমানের ছেলে জিহাদ আলী(৩২) ও ইকরী গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে আসাদুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরিফা, আসাদুল ও রশীদ গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) আদালতে উপস্থিত হয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত আসামি রশিদ, জিহাদ, আসাদুল ও নিহত মোবারকের সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক ছিলে গৃহবধূ আরিফা খাতুনের। টাকার বিনিময়ে তারা আরিফার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হতেন। তবে তাদের মধ্যে মোবারকের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় মোবারক ঠিকমতো টাকা পরিশোধ করতে পারতেন না। এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে মোবারক আরিফার সঙ্গে অন্য তিনজনের অবৈধ সম্পর্কের কথা মানুষের মাঝে প্রচার করে। এছাড়া আসামি আসাদুলের স্ত্রীর সঙ্গে নিহত মোবারকের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এতে তারা ক্ষুব্ধ হন এবং মোবারককে একটি উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা শুরু করেন।’

প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা

লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘গত ১৫ জুন বিকেলে ইকরী গ্রামের বেড়ী বিলে একটি পাট ক্ষেতের পাশে গরু চরাচ্ছিলেন মোবারক। এ সময় পূর্ব পরিকল্পনা মতো আরিফা সেখানে উপস্থিত হয়ে মোবারককে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রলোভন দেখিয়ে পাটক্ষেতে নিয়ে যান। পাটক্ষেতে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে মোবারকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে রশিদ, জিহাদ ও আসাদুল। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই কাঁচা পাট দিয়ে তারা মোবারকের হাত ও পা বেঁধে ফেলে। এরপর আরিফা মোবারককে ঘুরিয়ে মাটির সঙ্গে মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে মোবারকের মৃত্যু নিশ্চিত করে।’

পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর আসামিরা স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে থাকেন। তারা হত্যাকাণ্ড ঘটাতে গিয়ে কোনোপ্রকার ফোনকল বা প্রযুক্তি ব্যবহার করেনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত, বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ দীলিপ কুমার দাস, গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাহারুল ইসলাম, গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আনারুল ইসলাম প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর