দুই সপ্তাহেও মিলছেনা করোনা পরীক্ষার ফলাফল

, জাতীয়

গনেশ দাস, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া | 2023-08-26 21:02:26

বিআরটিসির কর্মচারী মঞ্জুর আলী মন্ডল। করোনার উপসর্গ নিয়ে গত ৭ জুন বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি হোন। ওই দিনই তার নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে। তিনি কয়েকদিনের মধ্যে সুস্থ হলেও এখন পর্যন্ত তার নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসেনি।

একই অবস্থার স্বীকার বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুল কাইয়ুম। তিনি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নমুনা দেয়ার ১৪ দিন পরে তিনি প্রায় সুস্থ। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা সে পরীক্ষার ফলাফল
বুধবার (২৪ জুন) পর্যন্ত পাননি।

এমন অবস্থা বগুড়াবাসীর অনেকেরই। করোনার সংক্রমণের সঙ্গে নমুনা পরীক্ষারও বেসামাল অবস্থা। বেশির ভাগ পরীক্ষার ফলাফল পেতে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগছে। তবে বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজে সকালে নমুনা দিলে রাতেই ফলাফল জানা যাচ্ছে। এতে গুনতে হচ্ছে চার হাজার টাকা। আর নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দেরিতে আসায় একদিকে যেমন সংক্রমণ বাড়ছে অন্যদিকে ভোগান্তি এবং অনিশ্চয়তাসহ মানসিক চাপ পোহাতে হচ্ছে।

বগুড়া শজিমেক কর্তৃপক্ষ বলছেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকা নমুনার সংখ্যা ১৩শ। যেখানে প্রতিদিন তাদের আরটিপিসির ল্যাবে পরীক্ষার সক্ষমতা ১৮৮। দিনে নতুন করে পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা হচ্ছে ৩ শতাধিক। শুধু নমুনা পরীক্ষার জট নয়, এখন নমুনা সংগ্রহের কিট, ভিটিএম’র (ভাইরাস ট্রান্সফার মিডিয়াম) ও সোয়াপ স্টিক সংকট থাকায় নমুনা সংগ্রহেও জটিলতা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শজিমেক ল্যাবে নতুন আরেকটি পিসিআর মেশিন স্থাপন না করলে করোনার নমুনা পরীক্ষার জট ও লোকজনের ভোগান্তি কমবে না।

বগুড়া শজিমেক'র অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. রেজাউল আলম জুয়েল জানান, ১২টি উপজেলা ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন সংগ্রহ হয় সাড়ে ৫ থেকে ৬শ নমুনা। প্রতিদিন সাড়ে ৩ শর বেশি নমুনার জট তৈরি হচ্ছে। জট হওয়া নমুনা ৪/৫ দিন পর পর ঢাকায় ন্যাশনাল ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। সেখানে পরীক্ষা শেষে ফলাফল আসতে আরো ৪/৫ দিন লাগছে। এরপর সে সব ফলাফল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ঘোষণা করছে। এজন্য পরীক্ষার ফলাফল পেতে রোগীদের বিলম্ব হচ্ছে।

মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের আরটিপিসিআর ল্যাবে আরেকটি পিসিআর মেশিন জরুরী প্রয়োজন। এটি হলে আগেরটির ব্যাক আপ হিসাবেও যেমন কাজ করবে সেই সঙ্গে বর্তমান লোকবল দিয়েই আরেকটি পিসিআর মেশিনে প্রতিদিন আরো ৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় ভাবে করোনা পরীক্ষা কিটের সঙ্গে ভিটিএম বা টিউব সরবরাহ হয়ে থাকে। তবে সংক্রমণের হার বাড়ায় লোকজনের নমুনা দেয়ার পরিমাণও বেড়ে গেছে। এতে স্যাম্পল সংগ্রহ কিট বা ভিটিএম এবং সোয়াব স্টিকের সংকট দেখা দিয়েছে। সমস্যা সমাধানে স্বাস্থ্য বিভাগ বিকল্পভাবে স্যাম্পল কিট সংগ্রহ করে সরবরাহ করছে। তবে বিকল্প উপায়ে সংগ্রহ করা টিউবে নরমাল স্যালাইন ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সংগ্রহ তত্ত্বাবধানে করা একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর