নদী ভাঙনে বিলীন দক্ষিণ গাবুড়া গ্রাম

, জাতীয়

আমিনুল ইসলাম জুয়েল, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পীরগাছা (রংপুর) | 2023-08-29 18:28:17

ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের আরো একটি গ্রাম। তিস্তা নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া গ্রামটির নাম দক্ষিণ গাবুড়া।

বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায় গ্রামের শেষ বাড়িটিও। গত ৭ দিনের এই ভাঙনে প্রায় শতাধিক পরিবারের বসত বাড়ি ও আবাদি জমিসহ নদী গর্ভে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় গ্রামটি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়েছে দক্ষিণ গাবুড়া গ্রামের আজিম উদ্দিনের শেষ বাড়িটি। আজিম উদ্দিন তার ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে অন্যত্র। তবে কোথাও ভাঙনরোধে কোনো ব্যবস্থা লক্ষ করা যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ গাবুড়া (মাঠের হাট) গ্রামটিতে গ্রামে প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসতি ছিল। গ্রামটি তিন বছর আগে ভাঙনের কবলে পড়ে। এ গ্রামটির আগে চারটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ছাওলা ইউনিয়নের শিবদেব চর, আমিন পাড়া, বৈরাগীপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের পাকা মসজিদ ও প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অসংখ্য স্থাপনাও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এদিকে ঘর হারিয়ে ভাঙনের দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভাঙনের শিকার মানুষগুলো। গরু-ছাগল নিয়ে বসবাসের জন্য একটু ঠাঁই খুঁজতে তারা এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছেন। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে।

নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিবছর তিস্তার ভাঙনের কবলে পড়ছে গ্রামগুলো।

আজিম উদ্দিন নামে এক ভুক্তভোগী জানান, প্রায় এক মাস ধরে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নদী সবকিছু কেড়ে নিয়ে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে। গৃহহারা হয়েছে কয়েকশ পরিবার। খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে জীবন পার করছেন।

সালেহা বেগম বলেন, ‘কোথায় যাব কিছুই বুঝতে পারছি না। বর্তমানে আমরা নিঃস্ব। প্রতিবছরই নদী ভাঙছে, তারপরও ভাঙনরোধে সরকার কোনো ব্যবস্থাই নিল না। বাধ্য হয়ে নদীর মাঝে জেগে ওঠা চরে আবারও বসতি গড়তেছি। আমরা জানি আবারও নিশ্চিত ভাঙনের কবলে পড়বো।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, চলতি ভাঙনে দক্ষিণ গাবুড়া গ্রামে ৪০টি পরিবার ভাঙনের শিকার হয়েছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি।পরিবারগুলোকে দ্রুত সহযোগিতা করা হবে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান বলেন, দক্ষিণ গাবুড়া গ্রাম নদী ভাঙন কবলিত এলাকা। বরাদ্দ না থাকায় ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি। তবে ওই এলাকায় ভাঙন রোধে বরাদ্দের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর