নির্যাতন, যৌতুক দাবি ও ভ্রূণ হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে স্বামী সাংবাদিক রেজাউল করিমের প্লাবন বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন সাংবাদিক সাজিদা ইসলাম পারুল। কিন্তু মামলা করার ১ মাস ১৫ দিন পার হলেও পুলিশ এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি অভিযুক্ত আসামিকে।
নানা জায়গায় ধর্না দিয়ে বিচার না পেয়ে শেষ পর্যন্ত সাংবাদিক পারুল বুধবার (২৪ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি কি বিচার পাব না’-এই প্ল্যাকার্ড নিয়ে একাই মানববন্ধনে নামেন। বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এই মানববন্ধন করেন। এই এক ঘণ্টা অনবরত কেঁদে গেছেন বিচার প্রার্থী এই গণমাধ্যম কর্মী।
পারুল বলেন, এক মাস পনের দিন হয়েছে রেজাউল করিম প্লাবনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেছি। কত ধর্না দিচ্ছি, অথচ প্লাবন ঢাকা শহরেই ঘুরে বেড়ায় এবং পুলিশ নাকি তাকে খুঁজে পায় না। এমনকী এও শুনলাম, সামনের মাসে বাসা বদল করবে।
রেজাউল করিম প্লাবন আপোষের প্রস্তাব দিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে বিভিন্নভাবে আপোষের প্রস্তাব পাঠানোর নামে রসিকতা করে চলেছে প্লাবন। আসলে প্রশাসনকেও যে কতিপয় সাংবাদিক নেতা 'সমঝোতা' করে দেওয়ার কথা বলে ভুল বোঝাচ্ছেন, সেটা আমি বারবার বলেছি।
কতিপয় সাংবাদিক নেতার প্রশ্রয় এবং পুলিশ প্রশাসনের অবহেলা কাজে লাগাচ্ছে প্লাবন। প্রতিনিয়ত সমঝোতার চাপ, হুমকি, ফেসবুক আইডি হ্যাক করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। একদিন দেখবেন, পুরো আমাকেই গায়েব করে দেবে সে বলে জানান পারুল।
তিনি বলেন, তাই উপায়ান্তর না দেখে ন্যায় বিচারের দাবিতে আজ একাই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়ালাম। আশা করছি পুলিশের টনক নড়বে। না হয় এরপর প্লাবনকে গ্রেফতারের দাবিতে দাঁড়াবো হাতিরঝিল থানার সামনে। দাঁড়াবো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বাড়ির সামনে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের কাছে। তাতেও কাজ না হলে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করবো।
বিচারহীনতার এই সমাজে বেঁচে থাকার চেয়ে প্রতিবাদ করে মরে যাওয়া ভালো বলে মন্তব্য করেন পারুল।
প্রসঙ্গত, যৌতুক দাবি, যৌতুকের জন্য নির্যাতন এবং ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে গত ১১ মে হাতিরঝিল থানায় রেজাউল করিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন সমকালের স্টাফ রিপোর্টার সাজিদা ইসলাম পারুল।
মামলার এজহারে বলা হয়েছে, ২ এপ্রিল যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার রেজাউল করিমের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর।বিয়ের পর যৌতুক হিসেবে প্লাবন ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট দাবি করেন পারুলের কাছে। পরবর্তীতে যৌতুকসহ বিভিন্ন কারণে মারধর করলে সাজিদার গর্ভপাত হয়ে যায়। গত ৫ মে সাজিদা ইসলাম রেজাউল করিমের গ্রামের বাড়ি গেলে সেখানেও মারধরের শিকার হন।
রেজাউল করিমের ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্থায়ী সদস্য পদ স্থগিত করা হয়েছে। এ সংগঠনটির সাবেক নারী বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সাজিদা ইসলাম।