মানবতার সেবায় মানবিক কাউন্সিলর খোরশেদ

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 16:01:09

করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে নিজ উদ্যোগে নানাভাবে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। করোনা আক্রান্ত হয়ে যখন কেউ মারা যাচ্ছে তার দাফন করার জন্য পরিবারের সদস্যরা না আসলেও এগিয়ে গেছেন কাউন্সিলর খোরশেদ। কারো ঘরে বাজার নেই বাজার নিয়ে হাজির হয়েছেন কাউন্সিলর খোরশেদ।

মানবতার সেবায় মানবিক কাউন্সিলর খোরশেদ

এভাবে একের পর এক মানবিক সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। টিম খোরশেদ নামে তার একটা স্বেচ্ছাবক টিম রয়েছে। এই টিম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে মানুষের পাশে দাড়িয়েছে। এখন অবধি প্রতিনিয়িত কোনো না কোন ভাবে মানুষের পাশেই রয়েছে টিম খোরশেদ।

এই মানব সেবায় নিয়োজিত থেকে নিজের এবং তার প্রিয়তমা স্ত্রীর জীবন হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন খোরশেদ। তাতেও এক বিন্দু পিছপা হননি খোরশেদ। তার স্ত্রী ও তিনি নিজে করোনা পজিটিভ হয়ে এখন করোনা মুক্ত। গত ২৩ মে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন কাউন্সিলর খোরশেদের স্ত্রী আফরোজা খন্দকার লুনা। করোনার পাশাপাশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। তাতে তার ফুসফুসের ৫০ ভাগ অক্সিজেন সরবরাহ জটিলতায় তিনি কিছুদিন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

সবজি বিতরণ করছে টিম খোরশেদ

জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে করোনা জয় করে গত ৫ জুন বাসায় ফেরেন আফরোজা খন্দকার লুনা। এরআগে গত ৩০ মে মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ নিজেই করোনা আক্রান্ত হন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে আবারও নিজেই মাঠে উপস্থিত থেকে সকল কাজ করছেন মানবতার এই কাউন্সিলর। তিনি নারায়ণগঞ্জ তথা পুরো দেশে একজন আলোচিত মানুষ।

প্রতিবারই কোন না কোন দুর্যোগে অসহায় মানুষটির পাশে থাকেন এই মানবতার কাউন্সিলর। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে কার্যক্রম চালানোর সময় থেকে ১০০ তম দিনে প্রত্যেক পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে ডিম বিতরণ করেন। প্রতি পিচ ডিমের দাম রাখা হয় ৩ টাকা করে।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জে যখন যেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেছে মুসলিম বা হিন্দু যেই হোক তার দাফন বা সৎকারের প্রয়োজন হলে সবার আগে টিম খোরশেদ। এখন পর্যন্ত ৮৭টি মরদেহ দাফন করেছে টিম খোরশেদ। এসব মৃত ব্যক্তির সকলেই করোনা পজিটিভ ছিলেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় পরিবারের অনেকেই কাছে আসেনি। তবে এসেছে টিম খোরশেদ।

স্ত্রী আফরোজা খন্দকার লুনার সঙ্গে মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ

মরদেহ দাফন, ত্রাণ বিতরণ বা খাদ্য সরবরাহ ছাড়াও প্লাজমা ডোনেশনেও নিয়েছেন বিশেষ উদ্যোগ। করোনা জয় করার পর যারা স্বেচ্ছায় প্লাজমা দিচ্ছেন তাদের সেই প্লাজমা সংগ্রহ করে প্রয়োজন অনুযায়ী রোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এই কাজে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করতে করোনা জয়ের পর ২৪ জুন নিজেই প্লাজমা দেন মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। গতকাল পর্যন্ত ১৫ দিনে ২২ জন ডোনার ৩০ জন মুমূর্ষ করোনা রোগীকে প্লাজমা ডোনেশন করে টিম খোরশেদ।

টিম খোরশেদ

প্লাজমা দেওয়ার সময় মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, জুন মাসের মধ্যে আরো ২০ জনকে প্লাজমা ডোনেশন করার টার্গেট নিয়েছি। এছাড়া এখন পর্যন্ত আমরা ২০ জনকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়েছি। আমাদের ১০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। আমাদের সকল সেবা শতভাগ ফ্রি।

খোরশেদ বলেন, আমি করোনা মুক্ত হয়ে প্লাজমা দেওয়ার জন্য আসছি। যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে মুক্ত হয়েছেন, আপনার সকলে প্লাজমা দান করুন। আপনার এক ব্যাগ প্লাজমা সংকটাপন্ন মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে সাহায্য করবে। আসুন প্লাজমা দেই, জীবন বাঁচাই। আমাদের স্লোগান আল্লাহর জন্য আমাদের সকল কাজ। করোনা আক্রান্ত ও মৃতদের স্বজন আমরা। মানুষের সেবা করার জন্য মাঠে নেমেছি। আমরা কিছু চাইনা শুধু মানুষের ভালোবাসা ও দোয়া চাই।

এ সম্পর্কিত আরও খবর