৪৬ বছর ধরে আচার বিক্রি করেন সেকান্দার

বরিশাল, জাতীয়

ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-29 23:40:56

বরিশাল: `প্রায় ৪৬ বছর হবে। হেই স্বাধীনের পর থেকে আট আনা দামে আচার বেচা শুরু করছি। এহনো তোমাগো দোয়ায় বেইচ্চা যাইতাছি। মোর অনেক কাস্টমার মেলা দূর থেইকা আচার খাইতে আহে। চেষ্টা তো করি হেই আগের মতো আচারের মান ভালো রাখতে।'

রোববার (২৬ আগস্ট) বার্তা২৪.কমকে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন বরিশাল নগরের বটতলা এলাকার প্রবীণ আচার বিক্রেতা মো. সেকান্দার আলী মুনশী (৭৫)।

তিনি জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের দিকে নগরীর বটতলা এলাকায় আচার বিক্রয় করা শুরু করেন তিনি। আর সেই সময় থেকে এখনো আচার বিক্রয় করে যাচ্ছেন। তবে বর্তমানে আচার বিক্রয়ের পাশাপাশি ঝালমুড়ি, ফুচকাসহ আরও কয়েকটি আইটেম যোগ করেছেন সেকান্দার আলী।

নগরীর জিলা স্কুল, হালিমা খাতুন, পরেশ সাগর মাঠ, পলিটেকনিক কলেজসহ এসব এলাকার আশপাশে এতো বছর ধরে আচার বিক্রি করছেন তিনি।

সেকান্দার আলী জানান, আচার নিজের হাতে তৈরি করেন তিনি। তার কাছে আমড়া, বড়ই, তেঁতুল, আম, চালতা, পেয়ারা, কামরাঙা, জাম্বুরাসহ ১০ আইটেমের আচার পাওয়া যায়। এছাড়াও অন্যান্য ফলফলাদির মৌসুমে সেই ফলের আচারও বানিয়ে থাকেন তিনি।

বেচাবিক্রির কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার টাকা বিক্রয় করেন, সব খরচ বাদ দিয়ে তার প্রায় ৫শ থেকে ৭শ টাকা লাভ থাকে। আর এই টাকা দিয়ে তার সংসার ভালো মতো চলে যাচ্ছে।

সেকান্দার আলী বলেন, ‘আল্লাহ মোরে ভালো রাখছে। এহন এই আচার বেইচ্চা ইনকাম ভালোই হয়। ৬ সদস্যের পরিবারে শান্তিতে মাইয়া ও নাতিগো লগে তোমার দাদি আর মুই থাহি।’

তবে সেকান্দার আলী আফসোস করে বলেন, ‘এই এলাকায় এক সঙ্গে ৮-৯ জন মিলে আচার বিক্রি করা শুরু করেছিলাম। যার মধ্যে খলিল, সোবহান, আতাহার, মোতাহার ভালো ব্যবসা করত। কিন্তু তাদের মধ্যে একমাত্র আমি ছাড়া আর কেউই বেঁচে নেই।’

তবে যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন এই আচার বিক্রি করে যাবেন বলে জানান প্রবীণ আচার বিক্রেতা সেকান্দার আলী।

এ সম্পর্কিত আরও খবর