তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, বাড়ছে বিপদ

, জাতীয়

মাহমুদ আল হাসান রাফিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী | 2023-08-31 00:29:18

আষাঢ়ের বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ফুলে উঠেছে তিস্তার বুক। চারদিক পানিতে টইটুম্বর। গত ৭২ ঘণ্টায় পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়াতে নদী অববাহিকাসহ নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন নীলফামারীর নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের কয়েক শতাধিক পরিবার। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকটে পড়েছেন তারা।

রোববার (২৮ জুন) বিকেল ৩টা থেকে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত তিনদিন ধরেই ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

নদীতে পানি বাড়ায় চরাঞ্চলের সবজি খেতসহ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত পানির তোড়ে পূর্ব খড়িবাড়ি টাপুরচরে বাধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে অনেক গাছপালা ও ঘরবাড়ি। পানিবন্দি মানুষের মধ্যে বিশুদ্ধ পানির সংকটসহ গবাদি পশু-পাখির বাসস্থান নিয়ে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই নদী গর্ভে ঘরবাড়ি হারিয়ে নৌকায় ভাসমান জীবনযাপন করছে। এখনো ভাঙন ঝুঁকিতে আছে বহু পরিবার।

তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রেয়েছে

জেলার ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, ‘তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি কারণে ইউনিয়নের প্রায় ৬ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন। পূর্ব খড়িবাড়ি টাপুরচর এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে করা দুই হাজার মিটার বালির বাঁধটির ৫০০ মিটার গত বন্যায় বিলীন হয়েছে। এবারের বন্যায় আবারও বাঁধটির ২০০ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হলো।’

ঝুনাগাছ চাপনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘ভাঙনের মুখে ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ি ও ছাতুনামা মৌজার ৩৪টি পরিবারের ঘরবাড়ি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। আরও ৪০ পরিবার ভাঙনের মুখে পড়ে বসতঘর নৌকায় করে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। প্রায় ৮০০ পরিবার পানিবন্দী রয়েছে।’

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় বার্তা২৪.কম-কে জানান, ‘উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী, খগাখগিবাড়ী ও ঝুনাগাছচাপানী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ৩ হাজার ১২০টি পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। এরইমধ্যে নদীতে বিলিন হওয়া পরিবারগুলোকে শুকনো খাবার ও নগদ দুই হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৪৬.৮ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে।’

নদীর ভাঙনের মুখে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া ঘর

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি সকালের দিকে ৫ সেন্টিমিটার কম থাকলেও বর্তমানে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের সব কয়টি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। আগামীকাল (সোমবার) থেকে পানি কমতে পারে।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর