স্বাস্থ্যকর্মীর বাসা মিনি ক্লিনিক: সিজারে নবজাতকের মৃত্যু নিয়ে তোলপাড়

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর | 2023-09-01 02:58:03

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে করোনার ভয় দেখিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীর বাসায় গড়ে তোলা 'মিনি ক্লিনিকে' এক প্রসূতিকে সিজার করতে গিয়ে নবজাতককে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৩০ জুন) সকালে মৃত নবজাতকের মা মরিয়ম বেগম সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

সোমবার (২৯ জুন) বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মী মায়া বেগমের রায়পুর পৌর শহরের টিসি সড়কের বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে খবর পেয়ে সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরীন চৌধুরী পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি পুলিশ ও ক্ষতিগ্রস্তদের আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীর উপযুক্ত বিচার করার আশ্বাস দিয়ে নবজাতকের স্বজনদের সান্ত্বনা দেন তিনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার লিখিত অভিযোগ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্যদিকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই শিশুটির মরদেহ দাফন করা হয়েছে। মামলা হলে ময়নাতদন্তের জন্য শিশুটির মরদেহ কবর থেকে উঠানো হবে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের শায়েস্তানগর গ্রামের প্রবাসী দেলোয়ারের স্ত্রী মরিয়ম বেগমের প্রসব ব্যথা উঠে। এ নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যকর্মী মায়া বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এ সময় তাদেরকে সরকারি হাসপাতালে নেয়া হলে করোনার ভয় ও টাকা বেশি খরচের কথা বলেন মায়া।

একপর্যায়ে রায়পুর পৌর শহরের টিসি মোড়ে মায়ার নিজ বাসার মিনি ক্লিনিকে ওই প্রসূতিকে ভর্তি করা হয়। এ সময় ৩ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়ে ওই প্রসূতির চিকিৎসা শুরু করা হয়। সিজারের আগে পেটে বাচ্চা জীবিত ছিল। কিন্তু সিজারে মৃত বাচ্চা প্রসবের বিষয়টি স্বাস্থ্যকর্মী নিজেই স্বজনদের জানান। এরপর সিজারে নবজাতকের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। ঘটনাটি তাৎক্ষণিক ইউএনও, পুলিশকে জানিয়েছে স্বজনরা।

ক্ষতিগ্রস্ত মরিয়ম বেগম বলেন, ‘আমাদের ভয় দেখিয়ে স্বাস্থ্যকর্মী তার ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করান। সিজারের আগে আমার বাচ্চা পেটে জীবিত ছিল। তারা আমার বাচ্চাকে মেরে ফেলেছে। আমি এ ক্লিনিক বন্ধসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মী মায়া বেগমের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তা রিসিভ করেননি তিনি।

প্রসঙ্গত, টাকার বিনিময়ে স্বাস্থ্যকর্মী মায়া তার বাসায় প্রসূতিদের সিজারসহ বিভিন্ন রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। এজন্য স্থানীয়দের কাছে বাসাটি মিনি ক্লিনিক হিসেবে পরিচিত।

এ সম্পর্কিত আরও খবর