দম ফেলার ফুসরত নেই নৌকা কারিগরদের

, জাতীয়

খন্দকার সুজন হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ | 2023-08-24 18:25:37

সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পদ্মা-যমুনাসহ অন্যান্য নদীর পানি। ক্রমেই সেই পানি ঢুকছে মানিকগঞ্জের ফসলি জমিতে। এতে করে নিচু এলাকার মানুষ নিত্য যাতায়াতের জন্য নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে ছোট-বড় ডিঙি নৌকার ওপর। চাহিদা অনুযায়ী নৌকার যোগান দিতে দম ফেলার ফুসরত নেই নৌকা কারিগরদের।

বুধবার (১ জুলাই) দুপুরে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় স্থানীয় কাঠমিস্ত্রিদের। সারা বছর বিভিন্ন ফার্নিচারের দোকান ও ঘর-বাড়ি তৈরি এবং মেরামতের কাজ করলেও এখন তারা ব্যস্ত রয়েছে নৌকা তৈরির কাজে। স্থানীয়ভাবে নৌকার চাহিদা থাকায় এর ব্যবসাও ভালো যাচ্ছে বলে মন্তব্য নৌকা কারিগর ও ব্যবসায়ীদের।

নৌকার চাহিদা থাকায় এর ব্যবসাও ভালো যাচ্ছে বলে মন্তব্য নৌকা কারিগর ও ব্যবসায়ীদের

ছোট-বড় এবং মাঝারি ধরনের ডিঙি নৌকা তৈরির জন্য মানিকগঞ্জ ও আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে কড়ই, শিমুল, মেহগনি, ঝিকা, শিশু এবং উরিয়ামসহ বিভিন্ন ধরণের গাছ ক্রয় করেন ব্যবসায়ীরা। এরপর স’মিল থেকে প্রয়োজনীয় মাপে কাঠ চেড়াই করে নৌকা তৈরিতে ব্যবহার করেন তারা।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার সরুপাই বাজারে নৌকা তৈরির কারিগর পলাশ চন্দ্র সরকার বলেন, সারা বছর ফার্নিচারের কাজ করেন। তবে বর্ষাকালে ফার্নিচার ব্যবসা মন্দা থাকে। আর এ সময়ে নৌকার কদর থাকে বেশি। তাই ফার্নিচার তৈরির কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রেখে নৌকা তৈরির কাজে যোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

১১ হাত লম্বা এবং আড়াই হাত পাশে’র নৌকাগুলোর চাহিদা স্থানীয় বাজারে বেশি

উজ্জল বিশ্বাস নামে এক কারিগর বলেন, ছোট একটি ডিঙি নৌকা একদিনে একজন কারিগরের পক্ষে বানানো সম্ভব নয়। তবে মাঝারি এবং বড় ডিঙি নৌকা তৈরির জন্য সময় একটু বেশি লাগে। ১১ হাত লম্বা এবং আড়াই হাত পাশে’র নৌকাগুলোর চাহিদা স্থানীয় বাজারে বেশি। কাঠ ও গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করে এমন আকারের প্রতিটি নৌকা সাড়ে ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।

কাঠ ও গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করে এমন আকারের প্রতিটি নৌকা সাড়ে ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়

সুলতান মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, করোনাকালীন সময়ে ফার্নিচার ব্যবসা মন্দা। এছাড়া বর্ষাকালে ফার্নিচারের চাহিদাও কম থাকে। এজন্য বর্ষার সময়ে ফার্নিচার ব্যবসা বন্ধ রেখে নৌকা তৈরির ব্যবসা করা হয়। ঝিটকা বাজারে প্রতি শনিবার নৌকার হাটে বিক্রি হয় তৈরিকৃত এসব নৌকা। তবে অনেকে আবার অর্ডার দিয়েও পছন্দ অনুযায়ী নৌকা তৈরি করে নেন।

জেলার হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম সেন্টু বার্তা২৪.কম-কে বলেন, প্রতি শনিবার ঝিটকা হাটে তৈরিকৃত নৌকা নিয়ে আসেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। চাহিদা অনুযায়ী সেখান থেকে নৌকা ক্রয় করেন ক্রেতারা। প্রতি হাটে ২৫০ থেকে ৩০০ নৌকা বিক্রি হলেও সামনের সপ্তাহ থেকে বিক্রি আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর