রাজবাড়ীতে বাড়ছে পদ্মার পানি, বাড়ছে মানুষের আতঙ্ক। প্রতিদিনই কয়েক সেন্টিমিটার করে বাড়ছে পানি। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের অন্যতম প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাট ও নদী পাড়ের হাজারো পরিবার। নদী ভাঙনের আশঙ্কায় তারা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। গত এক দশক ধরে নদী ভাঙনের শিকার এসব মানুষ ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড স্থায়ী পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এরই মধ্যে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে কয়েক হাজার পরিবার অন্যত্র চলে গিয়েছেন। কেউ আবার জায়গা-জমি সব হারিয়ে খোলা আকাশের নিচেই পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। ভাঙনের কবলে পড়ে হয়েছেন ভূমিহীন।
এবারও চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই পদ্মার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথেই গোয়ালন্দের দুটি ইউনিয়নের প্রায় ১০ টি গ্রাম রয়েছে ভাঙনের চরম ঝুঁকিতে। এরই মাঝে এসব গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়ে রাজবাড়ীর তিনটি পয়েন্টের মধ্যে দৌলতদিয়া গেজ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ৩০ জুন এই পয়েন্টে দশমিক ২১ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছড়া ১ জুলাই দশমিক ১২ সেন্টিমিটার, ৩ জুলাই দশমিক ৪৪ সেন্টিমিটার এবং ৪ জুলাই দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে তা শনিবার পর্যন্ত দৌলতদিয়া পয়েন্টে ৯ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ছাত্তার মেম্বারপাড়া, নতুনপাড়া, ব্যাপারীপাড়ার একাধিক নদী পাড়ের মানুষ বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রায় ১০-১২ বছর ধরেই নদী ভাঙছে। প্রতিবছরই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে আমাদের বসতভিটাসহ কৃষি আবাদী জমি। ভাঙন রোধে নেই কোন স্থায়ী ব্যবস্থা। যখন ভাঙন শুরু হয় তখনই কেবল নামে মাত্র কাজ করে। যে কাজে কোন সফলতা আসে না। শুধু শুধু সরকারের টাকা নষ্ট। আমরা চাই-সরকার নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করুক।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, নদী ভাঙন থেকে নদী পাড়ের মানুষগুলোকে রক্ষা করার জন্য আমরা এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।যদি ভাঙনরোধে অগ্রিম কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয় তাহলে এ বছরও নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে অনেক গ্রাম।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাটের শাখা ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রতি বছরই ঘাটে নদী ভাঙনের প্রভাব পড়ে। যার কারণে ঘাটে অনেক সমস্যার সৃষ্টির হয়। এবছরও ঘাট নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে দাপ্তরিক কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি ভাঙনরোধে খুব দ্রুতই কাজ শুরু হবে।