করোনায় দেশব্যাপী হাজার ছাড়াল কোয়ান্টামের দাফন সেবা

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-24 03:24:22

করোনায় মৃতদের শেষ বিদায় জানাতে দেশব্যাপী চলছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের দাফন সেবা। এরই মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে এক হাজারের ওপর মরদেহ দাফন বা সৎকার করেছেন কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবকরা। গত ৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে সর্বধর্মীয় মানুষের শেষযাত্রার সেবায় চলছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের এ দাফন সেবা।

কোভিড-১৯ দাফন কার্যক্রমের সমন্বয়ক ছালেহ আহমেদ বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টান সব ধর্মের জন্যেই আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। নিজ নিজ ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে আমরা দাফন বা সৎকার কাজ সম্পন্ন করছি। সারা দেশেই সুসংগঠিতভাবে সেবাদানে নিয়োজিত আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দল। এ পর্যন্ত কোভিড-১৯ ও সাসপেক্টেড হাজারেরও অধিক মরদেহের শেষকৃত্যে জড়িত ছিল আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দল।

শনিবার (৪ জুলাই) পর্যন্ত সারা দেশে মোট ১ হাজার ৫৫ জনের মরদেহ দাফন, সৎকার বা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে কোয়ান্টাম। এর মধ্যে মুসলিম দাফন-কাফনে ৮৯১ জন, সনাতন ১৫২ জন, বৌদ্ধ ধর্মালম্বী ৯ জন এবং খ্রিষ্টান ধর্মের ৩ জনের শেষ বিদায়ে পাশে ছিল কোয়ান্টাম।

ছালেহ আহমেদ জানান, ধর্মীয় বিধান মেনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণ অনুযায়ী দাফন সম্পন্ন করে যাচ্ছি আমরা। মুসলিমদের যথাযথ ধর্মীয় বিধান মেনে গোসল অজুসহ কাফনের কাপড় থেকে শুরু করে জানাজা পড়িয়ে যথাযথ নিয়মে কবরস্থ করানো হয়। মুসলিম ছাড়াও সনাতন ধর্মালম্বীদের জন্যে রয়েছে আমাদের দক্ষ সনাতন দল। খ্রিষ্টান কিংবা বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের জন্যে রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। এছাড়া মহিলাদের জন্যে রয়েছে আলাদা মহিলা দল।

পাবনার দক্ষিণ রাঘবপুরে গত ১১ জুন মৃত্যুবরণ করেন খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জেমস সুব্রত গোস্বামী। খ্রিস্টিয় রীতিনীতি মেনেই তাকে কবরস্থ করে কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবক দল। পরিবারের কয়েকজনের উপস্থিতিতে তাকে সমাহিত করা হয়।

করোনার এই সময়ে সারা দেশকে ২৩টি জোনে ভাগ করে চলছে কোয়ান্টামের দাফন সেবা। রাজধানী ছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, যশোর, বগুড়া, রংপুর, পাবনাসহ দেশের যেকোনো প্রান্তের জন্যে প্রস্তুত রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দল। প্রয়োজনে এক জেলা থেকে ওজু-গোসল ও কাফনের কাপড় পরিয়ে সমন্বয় করে অন্য জেলায় দাফন কাজ সম্পন্ন করছেন কোয়ান্টাম পরিবারের সদস্যরা।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ছালেহ আহমেদ বলেন, শেষকৃত্যে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দল মৃতের জন্যে পূর্ণ মমতা নিয়ে আন্তরিক প্রার্থনা করেন। পরিবারের স্বজনদের উপস্থিতি কম বা না থাকলেও সেখানে পরিবারের একজন হয়েই মৃতকে শেষ সম্মান জানাই আমরা। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই দিন-রাতের যেকোনো সময়ের জন্যে প্রস্তুত আমাদের পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক। সকল ধর্মের সকল বর্ণের মানুষের শেষ বিদায় জানাতে সকলের দোয়া ও সহযোগিতা নিয়ে আমরা শেষ পর্যন্ত সেবা দিয়ে যেতে চাই।

এ সম্পর্কিত আরও খবর