কোরবানীর জন্য ভারতীয় গরু আনায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চোরাকারবারিরা। তবে তাদের প্রতিহত করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড-বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সীমান্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে- ২০১৯ সালের ঈদুল আজহার আগে প্রথমবারের মতো ভারতীয় গরু আনার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এবার একটু আগেভাগেই সেই নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রণালয়টি। কিন্তু নির্দেশনা উপেক্ষা করে সীমান্ত এলাকায় তৎপর হয়ে উঠেছে চোরা চালানকারীরা।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তে সাধারণত বন্যার পানি বাড়লে গরু চোরাচালান বেড়ে যায়। জেলার বিস্তীর্ণ সীমান্ত এলাকায় রয়েছে পদ্মা নদী। নদীর এপারে বাংলাদেশ, ওপারে ভারত। তাই এ সব সীমান্তে গরু চোরাচালান খুব সহজ। বাংলাদেশি রাখালরা (চোরাচালানে নিয়োজিত) ওপারে গিয়ে রাতের আঁধারে গরু ভাসিয়ে দেয় পদ্মা নদীতে। সেই গরু সাঁতরে নদী পার হয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। আর নদী পথ হওয়ায় ওইসব সীমান্তে বিজিবি বা বিএসএফের টহলও থাকে কম।
জেলার একাধিক সীমান্তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যান্য বছর কোরবানীর সময় ব্যাপক সংখ্যক গরু আসতো ভারত থেকে। কিন্তু এ বছর এখনো তেমন সংখ্যক গরু আসতে শুরু করেনি। তবে এরইমধ্যে চোরাকারবারিদের তৎপরতা শুরু হয়েছে সীমান্ত এলাকায়।
শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সীমান্ত এলাকায় বাইরের লোকজনের আনাগোনা বেড়ে গেছে বেশ কিছুদিন থেকেই। প্রতি বছর কোরাবানির ঈদের আগে এমনটা হয়ে থাকে।
এদিকে সীমান্ত এলাকায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু চোরাচালান বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে বিজিবিও। তবে বাহিনীটির পক্ষ থেকে চোরাচালান প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানেও থাকার কথা জানানো হয়েছে।
সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৪৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মোহাম্মদ সুরুজ মিয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আসন্ন ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় গরু চোরাচালান বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যারা এ ধরণের চোরাচালান কার্যক্রমের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত তাদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ধরণের অবৈধ কার্যকলাপ বৃদ্ধির ফলে চোরাচালান বৃদ্ধিসহ সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণের জানমাল ও জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। চোরাচালান প্রতিরোধ এবং সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণের জানমাল ও জীবন রক্ষায় কঠোর নজরদারি বৃদ্ধিসহ টহল তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। রাতে টহল বৃদ্ধির মাধ্যমে সীমান্তে আধিপত্য বিস্তার, গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।