ভারত ফেরতদের তদারকির অভাবে বাড়ছে করোনা ঝুঁকি

, জাতীয়

আজিজুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্ত২৪.কম, বেনাপোল (যশোর) | 2023-08-28 17:37:54

বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ভারত ফেরত বাংলাদেশিদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় না থাকায় যেমন তাদের পরস্পরের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকছে তেমনি সংক্রমণ বাড়ছে ইমিগ্রেশন পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্মীদের। এছাড়া যাত্রীদের ১৪ দিনের হোমকোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণ তদারকি অভাবে দেশ জুড়ে করোনা সংক্রমণ আরও বেশি ছড়ানোর শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি, তাদেরকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বাড়িতে গিয়ে তারা সঙ্গরোধ (হোমকোয়ারেন্টাইন) মানছেন কিনা তা দেখবেন স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি। আর জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, তাদেরকে কেউ অবগত না করায় এ বিষয়ে কাজ করতে পারছেন না।

দেশে করোনা সংক্রমণের আগে প্রায় দেড় লাখের মতো বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীরা চিকিৎসা, ব্যবসা ও ভ্রমণে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থান করছিলেন। ভারতে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে তা বিস্তার রোধে ভারত ফেরত যাত্রীদের বাধ্যতামূলক ১৪ দিন সরকারি তত্ত্বাবধানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছিল। পরে সংক্রমণ ঝুঁকিমুক্ত হলে তাদের বাড়ি ফেরার ছাড়পত্র দেয়া হতো। ১৩ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠিতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন বাতিল করে হোমকোয়ারেন্টাইনের পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের। তবে হোমকোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে প্রশাসন বা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাজ করার কথা। কিন্তু কারও কোনো তদারকি না থাকায় যাত্রীরা বাড়িতে ফিরেই সাধারণ মানুষের সাথে মিশছেন। ফলে করোনা সংক্রমণ বিস্তারের সম্ভবনা আরও বাড়ছে। জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, ভারত ফেরত যাত্রীদের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে অবহিত না করায় তারা প্রতিরোধ ব্যবস্থায় কাজ করতে পারছেন না।

গত মাসের ১৯ তারিখে ভারত ফেরত যাত্রী ঢাকার আবু সুফিয়ান বলেন, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন, স্বাস্থ্যকর্মী বা কোন জনপ্রতিনিধি তার কেউ খবরও নেয়নি। তবে তদারকি থাকলে ভাল হয়।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি আহসান হাবিব বলেন, পুলিশ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে যাত্রীদের পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে যাত্রীর সংখ্যা বেশি হলে ইমিগ্রেশনে সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় সমস্যা কিছুটা সমস্যা হয়।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে যাত্রীদের হোমকোয়ারেন্টাইনের বিষয়ে অবহিত করা হচ্ছে। পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের হোমকোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করনে কাজ করার কথা।

যশোরের শার্শা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউয়িন পরিষধের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, যখন যাত্রীরা ভারত থেকে ফিরছেন তখন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করা হচ্ছে না। বাড়িতে এসেই তারা বাজার-হাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এতে সংক্রমণের ভয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। ৪/৫ দিন পর যখন সাধারণ মানুষের মাধ্যমে তারা জানতে পারছেন এরই মধ্যে ভারত ফেরত ব্যক্তি জনসাধারণের সাথে মিশে যাচ্ছে। সংশিষ্টরা যদি ভারত ফেরতদের তালিকা যা যা এলাকার জনপ্রতিনিধিদেও কাছে কাছে পৌঁছে দেন তবে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সুবিধা হয়।

গত ৭ জানুয়ারি থেকে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ভারত ফেরত যাত্রীদের করোনা প্রতিরোধে কাজ করছে ইমিগ্রেশন পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্মীরা। ২৮ জুন পর্যন্ত ভারত ফেরত ২ লাখ ৪৫ হাজার ৩৫১জন বাংলাদেশি যাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত পাওয়া গেছে এক যাত্রীর শরীরে। এসময় ইমিগ্রেশন ৪ পুলিশ সদস্য ও ৩ স্বাস্থ্যকর্মী করোনা পজেটিভ হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর