নেত্রকোনায় রঙ-বেরঙের ঘুড়ি উড়িয়ে সময় কাটছে তরুণদের

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নেত্রকোনা | 2023-08-30 08:18:59

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে নেত্রকোনার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থী ছাড়াও কর্মহীন রয়েছেন তরুণ সমাজ। এ অবস্থায় বেকার হয়ে পড়া তরুণ সমাজ রঙ-বেরঙের ঘুড়ি উড়িয়ে সময় পার করছেন।

সকাল ও বিকেলে বাতাস বইতে শুরু করলেই নেত্রকোনার আকাশে নানা রঙের ঘুড়ি উড়তে দেখা যায়। অনেক সময় সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্তও ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত থাকে তরুণরা। তরুণদের পাশাপাশি শিশু ও বৃদ্ধরাও ঘুড়ি উড়ানোতে মেতে উঠছেন।

রাতে ঘুড়ি উড়ানোর সময় হরেক রকম আলোকসজ্জারও ব্যবস্থা করা হয়। আলোকসজ্জা সম্বলিত সেসব ঘুড়ি রাতের আকাশে উড়াতে অনেকটা তারার মতো দেখায়।

ঘুড়ি উড়িয়ে একদিকে তরুণরা যেমন আনন্দ উপভোগ করছে, পাশাপাশি সাধারণ মানুষও বেশ আনন্দিত।

এদিকে, যুবসমাজ যাতে বাড়ির বাইরে না যায়, অহেতুক ঘোরাঘুরি ও আড্ডা না দেয় সে জন্য এবং করোনা সংক্রমণ থেকে তাদেরকে রক্ষা করতে জেলার সদর উপজেলার লক্ষীগঞ্জ গ্রামের শান্ত মিয়া নামে এক ঘুড়ির কারিগর বিনামূল্যে এলাকার তরুণদের ঘুড়ি তৈরি করে দিচ্ছেন। তিনি এ পর্যন্ত প্রায় ৪ শতাধিক ঘুড়ি তৈরি করে দিয়েছেন।

শান্ত মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের ঘুড়ি তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে জাহাজ ঘুড়ি, পাখি ঘুড়ি, সাপ ঘুড়ি, টেবিল ঘুড়ি, তেলেঙ্গা ঘুড়ি, পাছা ঘুড়িসহ আরও অনেক প্রকার ঘুড়ি রয়েছে। ১০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা ব্যয় করা হচ্ছে এসব ঘুড়িতে।’

জেলার কেন্দুয়া পৌর শহরের বাদে আঠারবাড়ি তুরুকপাড়া গ্রামের তরুণ খোকন মিয়া প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ করে নিজেই তৈরি করেছেন ১৫ ফুট প্রস্থ ও ১২ ফুট উচ্চতার একটি পাছা ঘুড়ি।

খোকন মিয়া বলেন, ‘করোনার কারণে কোনো কাজকাম নাই। বাড়িতে বসে থাকতেও ভালো লাগে না। তাই সময় কাটানোর জন্য ঘুড়িটা তৈরি করেছি। ঘুড়ি উড়ানোর সময় খুব আনন্দ লাগে। আশপাশের অনেক লোকজন ছুটে আসে আমার ঘুড়ি উড়ানো দেখতে। এতে সময়টা ভালোই কাটছে।’

একই উপজেলার কলেজ শিক্ষার্থী আকাশ পন্ডিত জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। বাইরেও বেশি ঘোরাঘুরি করা যায় না। তাই অবসর সময়টা বাড়ির পাশে পতিত জমিতে ঘুড়ি উড়িয়েই কাটানো হচ্ছে।

নেত্রকোনা জেলা শহরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আনোয়ার হুসাইনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘জেলা শহরের বাসা বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে তরুণরা যখন রঙ-বেরঙের ঘুড়ি উড়ায় তখন দেখতে বেশ ভালো লাগে। করোনাকালে অহেতুক ঘোরাঘুরি ও আড্ডা দেয়ার চাইতে ঘুড়ি উড়িয়ে সময় কাটানো খুব ভালো একটা উপায়।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর