সৈকতে ভেসে আসছে কাছিম, রক্ষায় উদ্যোগ নেই

, জাতীয়

মুহিববুল্লাহ মুহিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার | 2023-08-25 19:54:35

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হচ্ছে কক্সবাজার। টানা লকডাউনের কারণে সমুদ্র পাড়ের প্রকৃতিতে ফিরেছে প্রাণ। ভেসে আসছে ডলফিন ও কাছিমসহ নানা সামুদ্রিক প্রাণী। সৈকতের বালিয়াড়িতে বাসা বাঁধছে ক্ষুদে কাঁকড়ার দল। ডালপালা মেলতে শুরু করেছে সাগরলতা।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের এমন সুন্দর রূপ এর আগে কখনো দেখা যায়নি। তবে দুঃখের বিষয় হলো সমুদ্রে জেলেদের জালে মারা পড়ছে বা গুরুতর আহত হচ্ছে ডলফিন ও কাছিম। তাইতো সাম্প্রতিক সময়ে ডলফিনের দেখা মিললেও এখন আর চোখে পড়ে না। তবে এখনো কাছিম সৈকতে ভেসে আসছে। কিন্তু এগুলো রক্ষায় নেই কোনো উদ্যোগ।

পরিবেশবাদীদের অভিযোগ, ডলফিনের পর এবার কাছিম হত্যা করছে জেলেরা।

সামুদ্রিক প্রাণী নিয়ে কাজ করা 'ইকো ফিস বাংলাদেশের' কর্মকর্তাদের মতে, গত এক সপ্তাহে অন্তত শতাধিক কাছিম সৈকতে ভেসে এসেছে। এর মধ্যে কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্ট থেকে দরিয়ানগর পর্যন্ত এলাকায় ভেসে আসে অন্তত ৩৫টি কাছিম। এছাড়া টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন পয়েন্টে কাছিম ভেসে এসেছে। তবে এসব কাছিম ভেসে আসার পর তাদের সংরক্ষণ বা চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় মৃত্যু হচ্ছে। আর সমুদ্র সৈকত পাড়ে মৃত বা আহত কাছিমগুলোকে খাচ্ছে স্থানীয় বেওয়ারিশ কুকুরগুলো।

সৈকতে ভেসে আসা কাছিম খাচ্ছে কুুকুর।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাইফগার্ড কর্মী জয়নাল আবেদীন ভুট্টু বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘গত ৩ দিনে লাবণী পয়েন্ট থেকে দরিয়ানগর পর্যন্ত অন্তত ৩৫টি কাছিম দেখতে পেয়েছি। বেশির ভাগেরই শরীরে আঘাত রয়েছে। কিছু কাছিমের পা পর্যন্ত কেটে নেয়া হয়েছে। চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় সৈকতে এসে মারা যাচ্ছে কাছিমগুলো। অতি দ্রুত কাছিম সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করলে হয়তো সৈকতে মারা যাবে শত শত কাছিম।’

'ইকো ফিস বাংলাদেশের' কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাছিম নিয়ে কাজ করছি। কাছিমদের নিরাপত্তায় জেলেদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মাছ ধরার সময় জালে আটকে পড়া কাছিমগুলোর ওপর তারা নির্মম অত্যাচার চালায়। মাঝে মাঝে মেরে ফেলে। কখনো পা কেটে ফেলে দেয়। কখনোবা পিটিয়ে আহত করে। কিন্তু আহত কাছিমদের চিকিৎসা দেয়ার মতো ব্যবস্থা আমাদের কাছে নেই। তাই আমরা সৈকতে ভেসে আসা কাছিমগুলোকে দেখে আবার পানিতে ছেড়ে দেই।’

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসা কাছিম।

মেরিন লাইফ অ্যালায়েন্সের কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান, সৈকতে ভেসে আসছে কাছিম। কিন্তু সংরক্ষণের উদ্যোগ না থাকায় আবারো তা সাগরে ছেড়ে দেয়া হয়। আঘাতপ্রাপ্ত কাছিমের চিকিৎসার ব্যবস্থাও নেই। তাই সৈকতে মরছে কাছিম। যদি কাছিমগুলো আহত না হতো তাহলে তারা এগুলো নিয়ে নিতেন। কিন্তু আহত হওয়ায় কোনোভাবেই সেটাকে সংরক্ষণের আওতায় রাখা যাবে না বলে দাবি এ কর্মকর্তার।

এ বিষয়ে জানতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের মোবাইলে একাধিক কল করা হলেও তা রিসিভ করেননি তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর