করোনা মহামারির মধ্যেই আগামীকাল মঙ্গলবার যশোর-৬ কেশবপুর সংসদীয় আসনের উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সোমবার (১৩ জুলাই) সকাল থেকে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় উপজেলার ৩৭৪টি ভোটকেন্দ্রে ব্যালট ও ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনের উপকরণ পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনে ১ লাখ ৯০ হাজার ৬শ’ ৯০ ভোটার ভোট প্রদানের মধ্য দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।
নির্বাচনে আসনটিতে বিএনপি প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ ভোট বর্জন করায় লড়াই হবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহীন চাকলাদার ও লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের মধ্যে। নির্বাচনকে নির্বিঘ্নে করতে সোমবার থেকে মাঠে নেমেছে বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ভোট গ্রহন শুরু হবে। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
জেলা নির্বাচন কমিশন সূত্র মতে, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য নিয়োজিত থাকছে। নির্বাচনী এলাকায় ২জন জুডিশিয়াল ও ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। ১৮টি মোবাইল টিম ও ৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্সের ৬টি টিম নির্বাচনের মাঠে সার্বক্ষণিক কাজ করবে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি সদস্যদের নিয়োজিত রাখা হবে। এছাড়া ভোটের দিন নির্বাচনী এলাকায় যান চলাচল বন্ধ থাকবে। নির্বাচন কমিশন ভোটারদের জন্য অবশ্য প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যানারসহ হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, টিস্যু পেপারের ব্যবস্থা রেখেছে। পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ভোট দিয়েই দ্রুত স্থান ত্যাগ করার।
এ দিকে ভোটের দিন নির্বাচন কমিশনের সাথে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহীন চাকলাদার নিজ উদ্যোগে মোট ১ লাখ ৯০ হাজার ৬৯০ ভোটারের মাঝে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাছাড়া স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মী সমার্থকরা ভোটের মাঝে উপস্থিত থাকবেন। তাছাড়া করোনার সংক্রমণ ভোটারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে প্রতিটি কেন্দ্রের প্রবেশে পথে সাবান পানির ব্যবস্থা থাকছে। সেই সাথে ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বন্দোবস্ত রাখা হয়েছে।
যশোর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বার্তা ২৪.কমকে জানান, যশোর-৬ কেশবপুর আসনের উপ-নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ইতিমধ্যে এলাকায় এলাকায় টহল দিচ্ছে। এই আসেনের ৩৭৪টি ভোটকেন্দ্রে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, সিলসহ সব সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ ভোট উপহার দিতে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে পাঁচজন করে পুলিশ সদস্য ১২ জন আনসার সদস্য থাকবে। নির্বিঘ্নে ভোটারা কেন্দ্রে আসতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি সংসদ সদস্য ও সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য ঘোষণার পর বিজ্ঞপ্তি জারি করে উপ-নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ২৯ মার্চ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত থাকলেও তার এক সপ্তাহ আগে করোনার কারণে ২২ মার্চ ওই নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। তফশিল অনুযায়ী, ২৭ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, বিএনপির আবুল হোসেন আজাদ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান মনোনয়নপত্র দাখিল করে। এর মধ্যে বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫ জুলাই ভোট বর্জন করেন। এ নির্বাচনী এলাকায় মোট ১ লাখ ৯০ হাজার ৬৯০ ভোটারের মধ্যে রয়েছে ৯৫ হাজার ৫শ’ জন পুরুষ এবং ৯৫ হাজার ১৯০ জন মহিলা ভোটার। ৭৯ টি ভোটকেন্দ্রে রয়েছে ৩৭৪টি ভোটকক্ষ।