গুজব ঠেকাতে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে গণমাধ্যম

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-25 06:21:50

মূলধারার গণমাধ্যম গুজব ঠেকানোর ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশিষ্ট জনেরা।

মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) রাতে করোনাকালীন সংকট নিয়ে বিশেষ ওয়েবিনার 'বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিক' এর একাদশ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বরাবরের মতোই পর্বটি সরাসরি প্রচারিত হয় আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এবং অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে। একই সঙ্গে প্রচারিত হয় বিজয় টিভির পর্দায় ও ফেসবুক পেইজে। এছাড়া আরও প্রচারিত হয় বার্তা২৪, bdnews24, সমকাল, ইত্তেফাক, ভোরের কাগজ, যুগান্তর, বাংলা নিউজ২৪, জাগো নিউজ২৪, সারা বাংলা, বাংলাদেশ জার্নাল এবং চ্যানেল আই'র ফেসবুক পেইজে।

এবারের পর্বের আলোচনার বিষয় ছিলো ‘করোনা সংকট মোকাবেলায় সঠিক তথ্যপ্রবাহ’। এই সঙ্কটে গণমাধ্যমে সঠিক তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত, করোনা বিষয়ে সঠিক তথ্য প্রচার ও সরবরাহ, দুর্যোগ মোকাবিলায় সঠিক তথ্য প্রচারে গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে যুক্ত ছিলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্‌মুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ. আরাফাত, একাত্তর টিভির কারেন্ট এ্যাফেয়ার্স এডিটর মিথিলা ফারজানা ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-এর সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

এসময় তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বলেন, করোনা সংকট শুরুর পর থেকেই যখনই প্রবাসীরা দেশে আসছিলো তখন তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টানে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিলো। মানুষের ঘনত্ব বিবেচনায় বাংলাদেশ অন্য দেশের তুলনায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম।

তিনি আরো বলেন, 'আমার সুরক্ষা আমার হাতে' এই স্লোগানকে সামনে রেখে আমাদের প্রচেষ্টা ছিলো মানুষের কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা। সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের মাধ্যমে জনগণ যাতে নিজেকে সুরক্ষা রাখতে পারে, সচেতন রাখতে পারে, সেই তথ্যটা পৌঁছানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সচেতনতামূলক প্রচারণা এবং গুজবের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য প্রচার করা হয়েছে। সেই সাথে সংকট কালে বিরোধী দলের মানুষের পাশে না থেকে উলটো চলার রাজনীতিরও সমালোচনা করেন তিনি।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক এমপি বলেন, বিশ্বের সকলকে এই সময়ে দুইটি মহামারির মোকাবেলা করতে হচ্ছে, একটি করোনাভাইরাস অপরটি মিথ্যা অপপ্রচার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার এই দুটি সংকটের সাথে সাথে আম্পান নামের একটি ঘূর্ণিঝড়েরও মোকাবেলা করেছে। আমরা সংকটের শুরুতেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলাম যেখানে করোনা সংকট মোকাবেলায় জনগণকে সচেতন করতে এবং কোন এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ, পাবলিক প্রেসক্রিপশন, কোন এলাকায় হাসপাতালের সংখ্যা কত ও সেলফ টেস্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ছিলো।

তিনি বলেন, অনিবন্ধিত কোনো ওয়েবসাইট বা নিউজ সাইটের কোনো তথ্য যেনো মানুষ বিশ্বাস না করে সে ব্যাপারে সকলকে সচেতন থাকতে আহবান জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সঠিক তথ্য সমাজে আলোর ভূমিকা পালন করে। এই করোনা সংকটের সময় সঠিক তথ্যই আমাদের পথ দেখাচ্ছে, তথ্য ভ্রান্তির এই যুগে বস্তু নির্ভর তথ্যই আমাদের আলোর পথে নিয়ে যেতে পারে। সাধারণ মানুষ সঠিক তথ্য পেতে গণমাধ্যমের উপর নির্ভর করে থাকে, এখানে তথ্যের উৎস থেকে যদি সরাসরি তথ্যটা গণমাধ্যমে প্রদান করা হয় তাহলে ভথ্যবিভ্রান্তটা কমে যায়।

তিনি আরো বলেন, করোনা সংকটের সময়ে আমরা দেখেছি কোন কোন অনিবন্ধিত সংবাদপত্র থেকে বা রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সরাসরি অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এই অপতথ্য যাতে মানুষের দোরগোড়ায় না পৌছায় সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ ও গনমাধ্যমকর্মীদের আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহবান জানান তিনি।

সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ. আরাফাত বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী অশক্তিগুলোর জনগণের মধ্যে গুজব তৈরি এবং তা ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে সবসময় একটা উপযোগিতা আছে। এখন নতুন ভাবে তারা সোশ্যাল মিডিয়া এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করার চেষ্টা করে। মূলধারার গণমাধ্যম গুজব ঠেকানোর জন্য এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। মূলধারার গণমাধ্যমের সত্য ঘটনার আলোকে সঠিক তথ্য তুলে ধরা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ গণমাধ্যমের সঠিক তথ্য উপস্থাপনের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্র স্থাপিত হবে না। গণতন্ত্রের জন্যই আমাদের গণমাধ্যম কে প্রয়োজন।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, 'তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের যে সুফল আমরা ভোগ করতে পারি তার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে এই গুজব মারাত্মক রূপ সৃষ্টি হয়েছিলো।

তিনি আরো বলেন, যেহেতু তথ্য প্রযুক্তির এই ব্যবহারের ফলে গুজব সন্ত্রাস কিংবা গুজবের এই সমস্যাটা চলে আসছিলো বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বৃহত্তর ছাত্র সংগঠন হিসেবে কিংবা তরুণদের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে প্রথম থেকে গুজব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান করেছে এবং আমরা বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফরমে যে গুজবগুলো সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলোর সঠিক খবর মানুষের মাঝে ছড়ানোর জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর