জামালপুরে বন্যা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর | 2023-08-26 03:19:09

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বর্ষণে জামালপুরে যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বুধবার (১৫ জুলাই) দুপুরে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) আব্দুল মান্নান বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন। দ্বিতীয় দফার বন্যায় জেলার ৭টি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ।

পানিবন্দী মানুষ পরিবার পরিজন ও গৃহপালিত গরু ছাগল নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন । বন্যাকবলিত লোকজনের আশ্রয়ের জন্য খোলা হয়েছে ৫১টি আশ্রয় কেন্দ্র। দুর্গতদের মাঝে দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। বানভাসিদের পানিবাহিত রোগ দেখা দেওয়ায় ৩৯টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বন্যা দুর্গত এলাকায়।

ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক বলেন, পানি বৃদ্ধি প্রথম দফার রেকর্ড ভেঙেছে। সর্বত্রই এখন পানি। কোথাও শুকনো জায়গা নেই। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হচ্ছে। রাস্তা-ঘাটসহ ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষ আশ্রয়ের খুঁজে বেরিয়ে পড়েছেন। এসব এলাকায় এখন তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বর্ষণে জামালপুরে যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি

বন্যা দুর্গত এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনার প্রাদুর্ভাবে আগে থেকে কর্মহীন ছিল। তার সঙ্গে বন্যা যোগ হওয়ায় দুর্গত এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। একই সঙ্গে ফের বন্যায় আক্রান্ত হওয়ায় চরভাবে বিপাকে পড়েছেন দুর্গত এলাকার মানুষ। তাদের ঘরে পর্যাপ্ত খাবার নেই। অনেকে খাবার অভাবে চিড়া-মুড়ি খেয়েও থাকছেন। দুর্গত এলাকার লোকজন আশ্রয় কেন্দ্র, সেতু ও উঁচু স্থান যেতে শুরু করেছেন। ঘরবাড়ি বানের পানিতে ভেসে যাওয়া অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি ইউনিয়ন বন্যায় কবলিত। বুধবার সকালে দেওয়াগঞ্জ পৌর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়- যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পৌরসভার অধিকাংশ এলাকায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সড়কগুলোতে তিন থেকে চার ফুট পানি থাকায় যানবাহন চলাচল করতে পারছে না অধিকাংশ এলাকায়। পানিবন্দী হয়ে পড়ায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে উপজেলা পরিষদ ও ভূমি অফিসসহ কয়েকটি সরকারি দফতর।

আশ্রয় কেন্দ্র ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে

কয়েকজন যানবাহন চালক জানান, হঠাৎ করে বন্যার পানি আসায় রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। তাই এখন গাড়ি না চালানোয় তাদের উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে তাদের। তাই তারা দ্রুত প্রশাসনের কাছে ত্রাণের দাবি জানান।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, জেলায় বন্যা কবলিত এলাকায় এখন পর্যন্ত ৩১০ মেক্ট্রিক টক জিআর চাল ও নগদ ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং শুকনো খাবার ৪ হাজার প্যাকেট এবং গো-খাদ্য বাবদ দুই লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর