ধীরগতিতে কমছে যমুনার পানি, খাবার সংকটে বন্যার্তরা

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর | 2023-09-01 19:00:02

যমুনা নদীর পানি ধীরগতিতে কমলেও জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট।

গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার কমে এখনো বিপৎসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার (১৮ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে জামালপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) আব্দুল মান্নান বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন।

এতে দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, বকশীগঞ্জ, মেলান্দহ, সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ ও জামালপুর সদরের কমপক্ষে ৬৫৩টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়কের ১০টি স্থান দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় হাজরাবাড়ি পৌরসভাসহ অনেক এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।

এক সপ্তাহের বন্যায় জেলার প্রায় সাড়ে ৯ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব এলাকার বাড়ি-ঘর ও রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে ইউনিয়নের যোগাযোগ একেবারেই ভেঙে পড়েছে।

ইসলামপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘এ উপজেলায় ৪৬ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলার পাথর্শী ইউনিয়নে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক শুকনো খাবার ও রুটি বিতরণ করেছেন। অপরদিকে বেলগাছা ইউনিয়নে বন্যার্তদের মাঝে সংসদ সদস্য আলহাজ ফরিদুল হক খান দুলাল চাল বিতরণ করেছেন।’

জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস জানায়, নদী ভাঙনে ৩০৮টি বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ১৪ হাজার ২১০টি বাড়ি, ৪ হাজার ২৪৬টি নলকূপ, ৪ হাজার ৭৯৭টি পায়খানা, ১৯৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ৬৬ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, ৪ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ২৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ৬৫৮টি মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা এবং এতিমখানা বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা দুর্গতদের মাঝে এ পর্যন্ত ৭৮৪ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। জেলা কৃষি অফিস জানায়, বন্যা পানিতে ৮ হাজার ৮২০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে।

বন্যা কবলিত এলাকার পানিবন্দি মানুষ বাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন স্কুল, সড়ক বাঁধ ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করলেও এখনও অনেক পরিবার সরকারি ত্রাণ সহায়তা পায়নি বলে অভিযোগ বানভাসি মানুষের। বন্যা কবলিত এলাকায় খাদ্য, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো-খাদ্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে, জামালপুরের পৃথক পৃথক স্থানে দেওয়ানগঞ্জের সাজু মিয়া (৭), মেলান্দহের সকাল মিয়া (৩) ও জামালপুর সদরের সাদিয়া (১২) নামে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর