পাপুল প্রফেশনালি স্মাগলার বাইচান্স এমপি

, জাতীয়

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-12-22 20:46:22

আইন প্রণেতা হয়ে বেআইনি কাজের দায়ে কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম (পাপুল)। একজন আইন প্রণেতা হিসেবে বিদেশি কারাগারে গ্রেফতার সংসদের জন্য বিব্রতকর কি না? তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে? শুধু পাপুল নয় এর আগেও সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীন আচরণের অভিযোগ উঠেছে এসব বিষয় নিয়ে বার্তা২৪.কম-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেছেন, শহিদ ইসলাম পাপুল শুধু সংসদ নয় দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। তিনি বলেছেন, পাপুল প্রফেশনালি স্মাগলার বাইচান্স এমপি।

বার্তা২৪.কম: একজন আইন প্রণেতা ভিনদেশী কারাগারে গ্রেফতার হয়েছে, এক্ষেত্রে সংসদের করণীয় কী?

ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া: সংসদ চলে রুলস অব প্রসিডিউর এবং সংবিধানের বিধান অনুযায়ী। মাননীয় স্পিকারের অভাবে ডেপুটি স্পিকার সংসদ পরিচালনা করেন, সেটা কিন্তু সংবিধান এবং রুলস অব প্রসিডিউরের বিধান অনুযায়ী। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু প্রসিডিউর আমরা ফলো করি। অতীতের কিছু বিষয়ে আমরা সেটা ফলো করার চেষ্টা করি।

আইনি ব্যাখ্যা দিয়ে ডেপুটি স্পিকার বলেন, শহিদুল ইসলাম পাপুল সে কিন্তু আমাদের (আওয়ামী লীগের) মনোনীত কোনো প্রার্থী নয়, যার ফলে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত তাকে বহিষ্কার করতে পারেনি। আওয়ামী লীগের পক্ষে তাকে ‘বহিষ্কার’ করা সম্ভবও হবে না। তাকে যদি কেউ দল থেকে বহিষ্কার করতো তখন তার সদস্য পদ নিয়ে সরাসরি একটা প্রশ্ন উঠতো। এখন তার সদস্য পদ নিয়ে প্রশ্ন উঠবে তখন, যখন সে কমপক্ষে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত হবেন নৈতিক স্খলন জনিত কারণে।

বার্তা২৪.কম: পাপুলের কর্মকাণ্ডে সংসদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মনে করেন কি না?

ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া: সংসদের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার আগে আমি বলবো দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। সংসদ তো পরে। সে এই দেশের নাগরিক, তারপর সে একজন সংসদ সদস্য।

অতীতে একজন সংসদ সদস্যের উদাহরণ টেনে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, ১৯৮৮ সালে বিরোধী দল থেকে একটা প্রশ্ন উঠেছিল তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন প্রফেসর এম এ মতিন। তখন সিলেটের একজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালান কারবারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল এবং ধরাও পড়েছিলেন। তা নিয়ে দেশের প্রতিটি পত্রিকায় শিরোনামে আসে। এটার ওপর প্রফেসর মতিন সাহেবের কাছে সংসদে স্টেটমেন্ট দাবি করেছিল বিরোধী দল, তখন প্রফেসর মতিন উত্তর দিলেন ‘হি ইজ এ স্মাগলার বাই প্রফেশন, এমপি বাইচান্স। শহিদুল ইসলাম পাপুল, এদের ক্ষেত্রেও এই শব্দটা ব্যবহার করতে চাই যে ‘হি ইজ এ স্মাগলার বাই প্রফেশন, এমপি বাইচান্স।’ এখানে আওয়ামী লীগের বা বিএনপির ভালো প্রার্থী না থাকার কারণেই তিনি স্বতন্ত্র সদস্য হয়ে এসেছেন।

সংসদ তখনই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে, যখন তার বিরুদ্ধে একটা বিচারের কপি ওই দেশের সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে পাঠানো হবে বা যে কেউ যদি দরখাস্তসহ বা সাজার সার্টিফাইড কপিসহ স্পিকার সাহেবকে পাঠান তখন স্পিকার সিদ্ধান্ত নেবেন।

বার্তা২৪.কম: পাপুল কাণ্ডই প্রথম না, এর আগে একজন সংরক্ষিত সংসদ সদস্য ভুয়া পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা নিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। বার বার সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আসছে, কারণটা কি?

ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া: এটা খবরের কাগজে যেভাবে এসেছে, যেভাবে তখন তুলে ধরেছিল, আমরা মনে করেছিলাম ওই নারী সংসদ সদস্যের ভুল। কিন্তু সে স্থানীয় রাজনীতির শিকার।

বার্তা২৪.কম: ভুয়া পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেয়া একজন আইন প্রণেতা হিসেবে তিনি করতে পারেন?

ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া: না, না এরকম আচরণ আশা করা যায় না।

বার্তা২৪.কম: সময় দেওয়ার জন্য বার্তা২৪.কম এর পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।

ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া: আপনার মাধ্যমে বার্তা২৪.কম এর সকলকে ধন্যবাদ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর