কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া পৌরসভা এলাকায় ইজিবাইকের দাপট দিন দিন বেড়েই চলেছে। ইজিবাইক বাড়ার কারণে শহরে যান চলাচলে কোনো শৃঙ্খলা থাকছে না। যে যার ইচ্ছা মতো এসব অবৈধ যান চালাচ্ছে। এতে প্রতিদিন শহরে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
জানা যায়, কুষ্টিয়া শহরে ১০ হাজারের মতো ইজিবাইক চললেও পৌরসভার হিসাবে তা তিন হাজারের কিছু বেশি। এর মধ্যে পাঁচ শতাধিক ইজিবাইক পৌরসভায় কর দিয়ে লাইসেন্স নিয়ে শহরে চলাচল করছে। শহরে বেপরোয়াভাবে ইজিবাইক চলাচল করছে। অদক্ষ চালকের কারণে যেখানে-সেখানে ইউটার্ন নেয়া ও যাত্রী ওঠানো-নামানোতে প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
পৌরসভা সূত্র জানায়, পৌরসভার লাইসেন্স শাখা থেকে গত বছর (জুলাই ২০১৬ থেকে জুন ২০১৭) ১ হাজার ২৪৮ জন শহরের ভেতরে ইজিবাইকের ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স করেছিলেন। এ বছর করেছেন ৬০৪ জন। এক বছরের জন্য একটি ইজিবাইককে ভ্যাট-ট্যাক্স মিলে ২ হাজার ২৫ টাকা দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স করতে হয়। এরপর লাইসেন্স নেয়া ইজিবাইকগুলো পৌর এলাকায় চলার অনুমতি পায়।
তবে পৌরসভা ও ইজিবাইক চালক পরিষদের হিসাব মতে, শহরে অন্তত ১০ হাজার ইজিবাইক চলাচল করছে। শহরের সবচেয়ে বেশি ইজিবাইক জট লাগে তিনটি রুটে। সেগুলো হলো- মজমপুর থেকে এনএস রোড হয়ে বড় বাজার, থানা মোড় থেকে মোল্লাতেঘরিয়া এবং পলিটেকনিক থেকে কলেজ ও হাসপাতাল মোড় হয়ে সাদ্দাম বাজার পর্যন্ত।
ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ জানান, তার পরিষদে ২ হাজার ৩৯টি ইজিবাইক আছে, সেগুলো শহরে চলাচল করে। এর বাইরেও আরও ৬ হাজার ইজিবাইক শহরে চলছে, যেগুলো পৌরসভার বাইরে থেকে আসে। এরাই মূলত শহরে যানজট তৈরি করছে।
কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, এ বছর থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, শহরে ২ হাজার ইজিবাইক চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে। এর জন্য পুরো পৌরসভাকে ২৫টি রুটে ভাগ করা হয়েছে। লাইসেন্স নেয়া ইজিবাইকে রুট স্টিকার লাগানো থাকবে। এক রুটের গাড়ি অন্য রুটে চলতে পারবে না। বাইরের কোনো ইজিবাইক শহরে ঢুকতে দেয়া হবে না।
পৌরসভার লাইসেন্স শাখার পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানান, প্রতি মাসেই অভিযান চালিয়ে ইজিবাইক আটক করা হয়। তাদের লাইসেন্স করতে বলা হয়। না করলে পৌরসভার ভেতরে আটকে রাখা হয়। এরপরও শহরে প্রায় তিন হাজার ইজিবাইক লাইসেন্স ছাড়া চলছে।
কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ জানান, ইজিবাইকের বিষয়টি প্রায়ই জেলা সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়, অভিযোগ আসে। ইজিবাইকের জট নিরসনে চালক সংগ্রাম পরিষদকে চিঠি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি মোকাবিলায় পৌরসভাকে সহযোগিতা করা হবে।