বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ সংক্রমণের ফলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। ঘরবন্দি নারী ও শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকি, মানসিক চাপ ও বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত নারী কর্মীরা কর্মহীন হয়ে পড়ছে। অনেকের আয় কমে গেছে।
এসবের সরাসরি প্রভাব পড়ছে তাদের অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তার উপর। দেখা যায়, যে কোনো দুর্যোগের সময় নারী ও শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তবে করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ১ লাখ কোটি টাকার বেশি প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে নারীরা উপকৃত হচ্ছে। এক কোটি পরিবারকে সরকার খাদ্য সহায়তা ও শিশু খাদ্য বিতরণ করছে। করোনা মোকাবিলায় মন্ত্রণালয় থেকে নারী ও শিশুর উন্নয়ন ও সুরক্ষায় নতুন প্রকল্প ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় মন্ত্রণালয়ের করণীয় ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
করোনায় পারিবারিক সহিংসতা ও বাল্য বিয়ে বেড়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য বা পরিসংখ্যান নেই। সারা বিশ্বে নারী ও শিশুরা সহিংসতার স্বীকার হচ্ছে বাংলাদেশেও এর বাইরে নয়। তবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ, নারী ও শিশুর প্রতি যেকোনো ধরনের সহিংসতা বন্ধে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন কমিটি মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। নারী ও শিশু নির্যাতনের ক্ষেত্রে যেসব তথ্য এসেছে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, নারীর কর্মহীনতা দূর করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
সভায় সচিব কাজী রওশন আক্তার বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির অনিশ্চয়তা ও কর্মহীনতা নারীর উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে। করোনার সময়ে আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে তবে করোনা পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে।
এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পারভীন আকতার, অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভিন, অতিরিক্ত সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ, শিশু একাডেমির মহাপরিচালক জ্যোতি লাল কুরী, নির্বাহী পরিচালক মাকসুরা নূর ও বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকগণ।
সভায় করোনাকালে নারী-শিশু উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে কী ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে ও ভবিষ্যতে কী করা যেতে পারে সে বিষয়ে প্রকল্প পরিচালকগণ তাদের বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। আলোচনা শেষে বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ, চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে আরও জোরালো পদক্ষেপ ও নতুন প্রকল্প ও কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া অনলাইনে নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, অনলাইন প্লাটফর্মে বাজারজাত করণ, শিশুদের প্রণোদনা হিসেবে খেলনা প্রদান ও ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে শিশু বিকাশ কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়।