উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন জরুরি

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-25 15:07:49

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর এখনো পানিবন্দী খুলনা, সাতক্ষীরা উপকূলবর্তী জেলার অনেক মানুষ। তাদের সুরক্ষায় নানামুখী চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তাই দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিয়ে আলোচকরা বলেছেন, উপকূলবাসীর দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে চাই টেকসই বেড়িবাঁধ। পাশাপাশি উপকূলবর্তী এলাকার জন্য পৃথক একটা সাংগঠনিক কাঠামো গঠনের দাবি জানিয়েছেন তারা। সেক্ষেত্রে উপকূলবাসীর জন্য উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন জরুরি।

শনিবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় বার্তা২৪.কম আয়োজিত ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানে আলোচকরা এ দাবি করেন। বার্তা২৪.কমের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট শাহজাহান মোল্লার সঞ্চালনায় করোনাকালে ঘূর্ণিঝড়-বন্যা: ঝুঁকিতে নারী ও শিশু শীর্ষক আলোচনায় অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সরকারি দলীয় সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু, সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস), কক্সবাজারের চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা ও সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র।

পাইকগাছা ও কয়রা এলাকার ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরে সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পানে আমার নির্বাচনী এলাকার কয়রা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৪টিই পানির নিচে ছিল, একটি ইউনিয়নের অর্ধেক পানির নিচে ছিল, এছাড়া পাইকগাছার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পাইকগাছার ৬৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ এবং কয়রা উপজেলার ১২১ কিলোমিটারের মধ্যে পুরোটাই ঝুঁকিপূর্ণ। এবার আম্পানে ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে একেবারেই লন্ডভন্ড হয়ে যায় এবং তাতে বাঁধের ২৫টি পয়েন্ট ভেঙে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় এলাকার মানুষদের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে আমরা কতগুলো পয়েন্ট বন্ধ করতে পেরেছি। শুধু কাশিরহাট এলাকার পয়েন্টটি এখনো আটকাতে পারিনি। আশাকরি এক মাসের মধ্যে সেটিও আটকাতে পারব। এটা আটকাতে পারলেই আপাতত পানি মুক্ত হবে মানুষ এবং ঘরে ফিরে যেতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের দাবি একটাই টেকসই বেড়িবাঁধ। সেই টেকসই বেড়িবাঁধের জন্য প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা এবং কয়রাকে নিয়ে ৮ হাজার কোটি টাকার ৪টি প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। আমরা জানতে পেরেছি শিগগিরই সেই প্রকল্প পাস হবে। আমরা যতদূর জানি নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে টেকসই বেড়িবাঁধের কাজ শুরু করতে পারব।’

নিখিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, ‘আম্পানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। যে কারণে খুলনা অঞ্চলের মানুষ ভয়াবহ সংকটে পড়ে। এখনো তারা সংকটের মধ্যে কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘শুধু বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলেই সমাধান হবে না। সেই বেড়িবাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ এবং অবৈধভাবে চিংড়ির ঘের যেন না হয় তার জন্য স্থানীয় জনগণকে নিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। পাশাপাশি উপকূল অঞ্চলে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে একটি পৃথক বোর্ড দরকার। কিছু দিন আগে উপকূলের সমস্যা নিয়ে জাতীয় সম্মেলন হয়েছে। সেই জাতীয় সম্মেলন থেকে একটি উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠনের দাবি উঠেছে।’

জেসমিন প্রেমা বলেন, ‘গত ৩ মাস প্রতিদিনই একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি এবং প্রতিটি মুহূর্তেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। নারী ও শিশুদের চ্যালেঞ্জটা আরও বেশি। আমি কক্সবাজার এলাকায় কাজ করি, এখানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষ অত্যন্ত কনজারভেটিভ। তারা নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করে। তাই তাদের বোঝানো অনেক কষ্টের একটি কাজ। করোনা এবং বন্যায় আমাদের নারী শিশুরা অত্যন্ত ঝুঁকিতে। এ জন্য এনজিও ও সরকারি সংস্থাগুলোর আরও বেশি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। নারী শিশুদের সুরক্ষার জন্য কাজ করতে হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর