রংপুর চিনিকলের শ্রমিকদের ৪ মাসের বেতন বকেয়া

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা | 2023-08-26 00:04:49

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকলের ৩৫০ জন শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা গত চার মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে এসব মানুষকে। এমনকি বঞ্চিত হচ্ছে ঈদের আনন্দ থেকেও।

রংপুর চিনিকল ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে চিনিকলের ৩৫০ জন শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তারা বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য কোন সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না। ফলে তারা স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছেন। কয়েকদিন পরেই ঈদ হলেও আনন্দ নেই এসব শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা কারোর মুখেই। গত চার মাস ধরে বেতনের দাবিতে চিনিকলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ধর্না দিয়ে বসে থাকলেও কোনো সুফল মেলেনি। বেতনের একটি টাকাও দেননি তারা।

এদিকে বেতন ভাতার দাবিতে গত ১৩ জুলাই রংপুর চিনিকলের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান ধর্মঘটের মাধ্যমে ৭ দিনের লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা দেন রংপুর চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন। সে অনুযায়ী তারা শান্তিপূর্ণ বিভিন্ন কর্মসূচি
পালনও করেন। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি।

শ্রমিকরা বলেন, করোনার কারণে কোনো কাজ না থাকায় বেকার বসে থেকে সুদের উপর টাকা নিয়ে সংসার চালাচ্ছিলাম। এ অবস্থায় চিনিকলের আখের জমিতে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেছি। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও শ্রমের মূল্য পাইনি। ফলে যেই অভাব সেই অভাবই থেকে গেল। এখনো স্থানীয় দাদনের টাকা নিয়ে সংসার চালাচ্ছি। কিভাবে এতো ঋণ পরিশোধ করবো ভেবে পাচ্ছি না।

মিলের কর্মচারীরা বলেন, কয়েকদিন পরেই ঈদ। ছেলে-মেয়েদের কিন্ডার গার্ডেন বিদ্যালয় থেকে বেতনের জন্য চাপ দিচ্ছে। টাকা দিতে না পারায় তারা অপমানও করছে।

ইক্ষু উন্নয়ন সহকারী অ্যাসোসিয়েশনের (সিডিএ) সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী বলেন, খুবই সামান্য বেতনের চাকরি করে বাবা-মা ও স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সংসার চালাতে হয়। দিন এনে দিন খাই অবস্থা। সেখানে আবার গত চার মাস ধরে বেতন বন্ধ। ফলে একবেলা আধপেটা খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।

রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এএফএম জিয়াউল ফারুক বার্তা২৪.কমকে বলেন, শুধু যে শ্রমিক-কর্মচারীরাই বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না, তা কিন্তু নয়। চিনিকলের কর্মকর্তারাও বেতন পাচ্ছেন না। ১২ কোটি টাকার চিনি অবিক্রীত আছে। চিনি বিক্রি না হওয়ায় তাদের বেতন-ভাতা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে ঈদের আগে কিছু দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর