আরিচায় যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল, বিপাকে লাখো মানুষ

, জাতীয়

খন্দকার সুজন হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ | 2023-08-23 06:50:10

আরিচায় যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় চার সেন্টিমিটার বাড়লেও পরে তা কমে যায়। সবশেষ তথ্যানুযায়ী এই পয়েন্টের পানি স্থিতিশীল রয়েছে। তবে এখনো বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়েই পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে মানিকগঞ্জ পানি বিজ্ঞান শাখার পানির স্তর পরিমাপক ফারুক আহম্মেদ বলেন, যমুনা নদীর আরিচা পয়েন্টে পানির বিপদসীমা হচ্ছে ৯ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। আর এখন যমুনা নদীতে পানি রয়েছে ৯ দশমিক ৭১ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনার পানি।

যমুনায় পানি বৃদ্ধির ফলে এরই মধ্যে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে প্রায় এক মাস ধরে পানিবন্দি রয়েছে লাখো মানুষ। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সংকট রয়েছে এসব এলাকায়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে দাবি এলাকাবাসীর।

জেলার সিংগাইর উপজেলা ব্যতীত বাকী সবগুলো উপজেলা বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে দৌলতপুর, হরিরামপুর, শিবালয় উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। জেলার অধিকাংশ কৃষি জমির ফসল এখনো পানির নিচে রয়েছে। ভেঙে গেছে অধিকাংশ রাস্তা-ঘাট। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দারা।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যমতে, জেলার ৩১৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত। তলিয়ে গেছে জেলার ৩১ হাজার ৫৭৭ হেক্টর কৃষি জমির ফসল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৬৯ হাজার ৩৭৭টি পরিবারের লাখো মানুষ। ৫২টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক হাজার পরিবার।

প্রায় এক মাস ধরে পানিবন্দি রয়েছে লাখো মানুষ

হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, বন্যায় রাস্তা-ঘাটের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের অধিকাংশ মানুষ এখনো পানিবন্দি। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সংকটের প্রকট অভাব রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

জেলার দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারী ইউনিয়নের রহিম শেখ বলেন, বাড়ি-ঘর ডুবে গেছে মাস খানেক হয়। এলাকার অধিকাংশ কৃষি জমিও পানির নিচে। কাজ না থাকায় অলস বসে আসেন তিনি। বন্যা কবলিত হওয়ার পর একবার ত্রাণ পেয়েছে। যা দিয়ে সপ্তাহ খানেক চলার উপায় নেই বলে জানান তিনি।

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় ৩শ ৩০ মেট্রিক টন চাল এবং ৩ হাজার ৫০০ শুকনা খাবার প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও শিশুখাদ্য ও গো-খাদ্যের জন্য নগদ অর্থ বরাদ্দ রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসব ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর