দেশের অগ্রযাত্রায় জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী যেভাবে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা দেশকে নিয়ে ভাবেন, আমার ভাবতেই আশ্চর্য লাগে কিভাবে তিনি এতো কাজ করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর মাঝে আমি জাতির পিতার প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাই। কারণ তিনি এতো পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দেশের জন্য, দেশকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আপনার (শেখ হাসিনার) নেতৃত্বে দেশ আরো এগিয়ে যাবে, তাতে সন্দেহ নাই। প্রধানমন্ত্রী ২৪ ঘণ্টা দেশ নিয়ে চিন্তা করেছেন। উনি ছাড়া তো বিকল্প কাউকে দেখি না। সেজন্য তাকেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করতে হবে'।
রোববার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ এ কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, 'শতবর্ষের সাক্ষী তুমি হে মহান জন্ম তোমার ইতিহাস হবে দেশ হবে মহিয়ান, তুমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান'।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যদি ঘাতকের নিষ্ঠুর বুলেটে প্রাণ না হারাতেন তাহলে হয়তো তিনি শতায়ু হতেন। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা স্বাধীনতার অর্ধশত বর্ষে পদার্পণ করবে। কি আশ্চর্য এ মিলন সেতুবন্ধন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান আর তার স্বপ্নের বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এই দিনটি জাতি হিসেবে কিভাবে পালন করতাম সেটি ভাবলেও স্বপ্নের মতো লাগে। জাতির পিতার নেতৃত্বে পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।
তিনি আরো বলেন, বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাস ছিল পরাধীন। হাজার বছরের সেই গ্লানি থেকে মুক্ত হতে হয়েছে যার নেতৃত্বে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই তো তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিচ্ছবি। এই মুজিববর্ষ গোটা জাতির জন্য এক আনন্দঘন সময়। আমাদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে পরম শ্রদ্ধা ভালবাসা আর কৃতজ্ঞতা তার (বঙ্গবন্ধুর) জন্য।
রওশন এরশাদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যারা ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন তারাই আজ ইতিহাস থেকে মুছে গেছেন। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা এবং সোনার মানুষ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খলাবদ্ধ অন্যের দ্বারা শাসিত শোষিত বাঙালিকে প্রথম বারের মতো স্বাধীনতা স্বশাসন নিজের ভাগ্যে নিজে গড়ার অধিকার আদায় করে দিয়ে গেছেন। তবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে নিজেদের দিকে তাকাই তাহলে সেই আকাঙ্ক্ষিত মুক্তির চূড়ান্ত গন্তব্য থেকে এখনো আমরা অনেক দূরে অবস্থান করছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের বর্ণনা করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত ১১ বছরের দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। বঙ্গবন্ধু নির্ধারিত মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে এখনো বহুদূর হাঁটতে হবে। সামনে সেই পথ অনেক কঠিন ও সময়সাপেক্ষ।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে একটি রাষ্ট্র তৈরি করতে পারি তাহলে দুর্নীতিমুক্ত ন্যয়ভিত্তিক সুশৃঙ্খল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়তে বড় কোন বাঁধা থাকবে না। বঙ্গবন্ধু ছিলেন অস্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। আমরা রাজনীতি করি আমাদের ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক মতবাদ, রাজনৈতিক দর্শন, দলীয় আদর্শ থাকবে সেটাই স্বাভাবিক, এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু যে মানুষটির বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না যে মানুষটির জন্ম না হলে বাঙালি পেত না মুক্তি।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আরো এগিয়ে যাবে, সেজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলব দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করতে হবে। দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি যার নিপুণ হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে তিনি আর কেউ না বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।