শেয়ারবাজার নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী

, সংসদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 07:13:06

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণে নেই- অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের এমন বক্তব্যের পর এবার সংসদে বিনিয়োগকারীদের আশস্ত করলেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘শেয়ারবাজারে অনেক ঘটনা ঘটে গেছে অতীতে। এটা যেনো স্থিতিশীল থাকে তার জন্য অনেক ব্যবস্থা নিয়েছি। কাজেই শেয়ারবাজার নিয়ে খুব বেশি শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।

শেয়ারবাজার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শেয়ারবাজারে যারা যাচ্ছেন, তাদের জানা উচিত, লাভ যেমন হবে লোকশানও তেমন হবে। যেকোনো সময় লাভ হতে পারে, যেকোনো সময় লোকসান হতে পারে। লাভ করলেই খুশি আর লোকসান করলেই সরকারের দোষ, এটাতো ঠিক না। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থাপনার যা যা করা দরকার, সেটা কিস্তু আমরা করে যাচ্ছি। হটাৎ উপরে না উঠুক, আবার পরে না যাক। এখানে কেউ যদি গেম খেলতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, হবে।’

তিনি বলেন, ‘এটা তো জুয়া খেলার মতো, যারা বিনিয়োগ করে তাদের বিবেচনা করতে হবে কোন কোম্পানির শেযার কিনছেন, কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা কী, কিনলে লাভ হবে কিনা। তবে খুব বেশি শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটা কিভাবে ঠিক করা যায় আমরা এই সংসদে বসেই কয়েকদিন আগে প্রায় রাত ১০টা পর্যন্ত মিটিং করেছি। সেখানে আামাদের বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থমন্ত্রী সচিব ছিলেন। সবাইকে নিয়ে বসে এ ব্যাপারে আলাপ আলোচনা করেছি।’

সংসদ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের মানুষের কাছে একটা ‍খুনি জাতি হিসেবে পরিচিত হয়েছিল। হেয় প্রতিপন্ন হয়েছিল। যারা অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় এসেছিল, তারা বাংলাদেশটাকে কখনো উন্নত করতে চায়নি। বরং বাংলাদেশ দরিদ্র থাকুক, খাদ্যে ঘাটতি থাকুক, বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা অনেক দুরবস্থায় থাকুক আর এই ক্ষুধাভুক্ত জনগোষ্ঠীকে দেখিয়ে বিদেশ থেকে সাহায্যে এনে লুটেপুটে খাওয়া- এটাই ছিল তাদের কামনা।’

তিনি বলেন, ‘২০০১ সাল ক্ষমতায় আসতে পারলাম না, তখনই জঙ্গিবাদের সৃষ্টি, বাংলা ভাই এর সৃষ্টি, গ্রেনেড হামলার শিকার আমরা। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর অত্যাচার। জেল জুলুম মামলা হয়রানি ও অভাবে দুর্নীতি লুটপাট। এভাবে লুটপাট মানি লন্ডারিং থেকে বাংলাদেশ পাঁচ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন। 

‘এরপর ২০০৮ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ক্ষমতায় আছি। একটানা ধারাবাহিক ক্ষমতায় আছি বলেই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভ করেছি। দেশের কল্যাণে সার্বিকভাবে কাজ করছি। এটা কিন্তু শহরে না, এটা আমরা গ্রামের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী মজবুত করছি।’ 

সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘একটা সমস্যা আছে নদী ভাঙ্ন। এই নদী ভাঙার ফলে অনেকে গৃহহারা হচ্ছেন। এমপিদের অনুরোধ নিজ নিজ এলাকায় খোঁজ নিন কারা গৃহহারা, কাদের ঘর নেই, কাদের জমি নেই, নি:স্ব, খুঁজে বের করুন। এবার সমস্ত অর্থ ব্যয় করব গৃহহীনদের ঘর করে দেওয়ার জন্য।’

সম্প্রতি ওয়াসার পানিকাণ্ড নিয়ে বলেন, ‘ঢাকা শহরে পানির ব্যাপক অভাব ছিল। পানির হাহাকার ছিল। ওয়াসার পানিতে ময়লা পাওয়া যাচ্ছে। যারা অভিযোগ করছেন, তাদেরও বাড়িতে পানির ট্যাংকি আছে। সেই ট্যাংকিটা তারা নিয়মিত পরিষ্কার করে কিনা সেটাও দেখার বিষয় আছে। ওয়াসার একটা ফোন নম্বরও দেওয়া আছে। সেখানে অভিযোগ পেলে তারা ব্যবস্থা নেয়। কাজেই পানির সরবত নিয়ে যাওয়ার থেকে নিজেদের পানির ট্যাংক পরিষ্কার করে কিনা সেই খবর নিতে হবে।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সিকাণ্ড নিয়ে বলেন, ‘সবুজ আমাদের পতাকার রঙ। কোনো আন্তর্জাতিক ইভেন্ট হলে তখন একটা ড্রেস কোড আয়োজক সংস্থাই করে দেয়। জার্সির মধ্যে থাকা লাল রঙের অংশের মধ্যে বাংলাদেশ লেখা হয়েছিল। এতে আইসিসি আপত্তি জানিয়ে বলেছে, লালের মধ্যে দেশের নাম লেখা যাবে না। আইসিসির আপত্তি আমাদের মানতেই হবে। সেজন্য সেখানে সাদা দিয়ে লেখা হয়েছে। তাই জার্সি পাকিস্তানের মতো হয়ে গেছে, এটা কিন্তু ঠিক নয়।’

বিএনপির যারা সংসদে আসছেন তাদের স্বাগত জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, ‘স্বাগত জানাচ্ছি বিএনপির সংসদ সদস্যরা যারা যোগ দিয়েছেন। বিরোধীদলকে ধন্যবাদ আমরা চাই বিরোধীদল গঠনমূলক ভূমিকা রাখবেন। সেটা রেখে যাচ্ছেন। যাতে এই সংসদের প্রতি মানুষের আস্থা বিশ্বাস আরও বৃদ্ধি পায়। গণতন্ত্রের গতি যেন অব্যাহত থাকে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর