আওয়ামী লীগ ছাড়ি নাই, বহিষ্কারও করে নাই

, সংসদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-25 22:55:07

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বলেছেন, আজ আমার ওইদিকেই (সরকার দল) থাকার কথা ছিলো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। আজকের সংসদ নেত্রী আমাকে ছাত্রলীগের সভাপতি বানিয়েছিলেন। ডাকসুর ভিপিও বানিয়েছিলেন। তবে আমি কিন্তু আওয়ামী লীগ ছাড়ি নাই, আওয়ামী লীগও কিন্তু আমাকে বহিষ্কার করে নাই।

রোববার (২৩ জুন) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরাম থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য একথা বলেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীকে নির্বাচন করেন তিনি। তার শপথের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিএনপি নেতাদের শপথের প্রক্রিয়া।

সুলতান মনসুর আহমদ বলেন, গত ৭ মার্চ সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছিলাম। দেশে এবং বিদেশে এই সংসদ নিয়ে সন্দেহ আর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিলো, নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিলো। ওইদিন যদি আমি শপথ না নিতাম, তাহলে আজ বিএনপির যে কয়জনেই হোক না কেন তারা শপথ নিত বলে আমার মনে হয় না। বঙ্গবন্ধুর অনুসারী হিসেবে আমি ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ৫২ বছরের রাজনীতিতে যাকে দেখে রাজনীতি শিখেছিলাম তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জনগণের আশা আকাঙক্ষা বাস্তবায়নে আমি এই সংসদে এমপি হিসেবে শপথ নিয়েছি।

মাননীয় স্পিকার আপনি জানেন আজ আমার ওইদিকেই (সরকার দল) থাকার কথা ছিলো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। আজকের সংসদ নেত্রী আমাকে ছাত্রলীগের সভাপতি বানিয়েছিলেন। ডাকসুর ভিপিও বানিয়েছিলেন। আজকের সংসদ নেত্রীর নির্দেশে পাগলের বেশে বেশে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রুপসা থেকে পাথুরিয়া, সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত এমন কোনো জেলা নেই যে জেলায় বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির জন্য এক বা একাধিকবার যাইনি। এমনকি ৭০ এ বেশি উপজেলায় পাগলের বেশে বেশে বঙ্গবন্ধুর জন্য রাজনীতি করেছি।

তিনি বলেন, রাজনীতিতে স্বাধীনতার পরে যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো আমি মনে করি ২০০৮ সালের পর থেকে সেই প্রক্রিয়ায় আমিও শিকার হয়েছিলাম। এতদিন রাজনীতির কারাগারে ছিলাম। আমি আমার অনুভুতি থেকে মনে করেছিলাম-এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে একত্রে রাজনীতি করি যার মধ্য দিয়ে আগামী দিনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে হেল্প করা যায়। সেই লক্ষ্যেই জাতীয় নেতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ড. কামাল হোসেনকে সামনে নিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সাধারণ কর্মী হিসেবে সেদিন রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছিলাম। আমি কিন্তু আওয়ামী লীগ ছাড়ি নাই, আওয়ামী লীগও কিন্তু আমাকে বহিষ্কার করে নাই।

বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই বাজেটের মধ্য দিয়ে অবশ্যই উন্নয়ন হবে। সংসদ নেত্রী বারবার বলেছেন, যে ঘুষ খাবে আর যে ঘুষ নেবে আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আমি সব মন্ত্রণালয় নিয়ে বলব না। সংসদ নেত্রীকে সামনে নিয়ে আসুন আজ আমরা শপথ করি প্রধানমন্ত্রীর নীতিকে বাস্তবায়ন করি।

 

তিনি বলেন, আমার বিবেচনায় একটি কুচক্রী মহল প্রধানমন্ত্রীকে এমন দিকে ঠেলে দিয়েছে তা দু:খজনক। যারা প্রধানমন্ত্রীকে পয়েন্ট অব নো রিটার্নের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তাদের হাত থেকে রক্ষার জন্য, জাতিকে রক্ষার লক্ষ্যে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার দিনে দলকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে। এটা না হলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পুরণ করা যাবে না। 

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে যারা গাছের আগেরটাও খাইছেন, পরেরটাও খেয়েছেন, তাদের অনেকে আজকের সংসদেও আছে। স্বৈরাচারী বিরোধী আন্দোলনে যারা সমর্থন করেছে তারাও সংসদে আছে। ১/১১-এতে যারা সুবিধা নিয়েছে তারাও সংসদে আছে। সবাইকে নিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যাবে না। তাই যারা বঙ্গবন্ধুর অনুসারী, স্বাধীনতায় বিশ্বাসী তাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলুন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর