বসুন্ধরাসহ ৫ বায়ু দূষণকারী সিমেন্ট কারখানাকে পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান

, সংসদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 23:34:27

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্টের বাইরের চতুর্দিকে ১০ কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকাকে সরকার প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করলেও ৬ কিলোমিটারের মধ্যেই দেওয়া হয়েছে শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণের অনুমতি। একই সঙ্গে সঙ্কটাপন্ন এলাকায় পরিবেশ দূষণকারী শিল্প কারখানা স্থাপনে পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করা হয় না। তারপরও ৫টি বায়ু দূষণকারী সিমেন্ট কারখানাকে পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে। সেই ৫টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- মেঘনা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, বসুন্ধরা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, মংলা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, দুবাই-বাংলা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড এবং হোলসিম (বাংলাদেশ) লিমিটেড।

শনিবার (২৯ জুন) সকালে সংসদ ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে বেগম লুৎফুন নেসা খান ও সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের পৃথক দুই প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন সংসদকে এ তথ্য জানান।

লুৎফুন নেসা খানের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সুন্দরবনের নিকটতম স্থানসমূহে বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলার মংলাবন্দর শিল্প এলাকায় ৫টি বায়ু দূষণকারী সিমেন্ট কারখানাকে পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানসমূহ হলো মেঘনা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, বসুন্ধরা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, মংলা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, দুবাই-বাংলা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড এবং হোলসিম (বাংলাদেশ) লিমিটেড।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্ট হতে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক যাতে পরিবেশ দূষণ না হয়, সেজন্য পরিবেশ অধিদফতর এ সকল শিল্পকারখানা নিয়মিত পরিবীক্ষণ করছে এবং উদ্যোক্তাগণকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করছে। সুন্দরবনের নিকটতম স্থানে এলপিজি প্লান্টসহ বেশ কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান থাকলেও সেগুলি দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান নয়।

মমতাজ বেগমের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সুন্দরবনে ফরেস্ট ইনভেনটরি ১৯৮৫, ১৯৯৫ ও ২০১৩ সালের প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেন, সুন্দরবনে এককভাবে সুন্দরী গাছ যথাক্রমে ২০ শতাংশ, ১৮ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ১৮ দশমিক ভূমি বন আচ্ছাদিত আছে।

তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনে সুন্দরী গাছের পরিমাণ কিছুটা কমতি থাকলেও গেওয়া গাছের পরিমাণ তুলনামূলক বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৫ সালে বন শুমারি অনুযায়ী বাঘ ছিল ১০৬টি। ২০১৮ সালে ক্যামেরা ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে জরীপ অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১১৪টি।’

মন্ত্রী জানান, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর ৫ (১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ১৯৯৯ সালে সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্টের বাইরের চতুর্দিকে ১০কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকাকে সরকার প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) হিসেবে ঘোষণা করে।

তিনি বলেন, ‘সুন্দরবন প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকায় পরিবেশ দূষণকারী শিল্প কারখানা স্থাপনে পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করা হয় না। সুন্দরবন ইসিএ এলাকায় অবস্থিত বিদ্যমান শিল্প কারখানাগুলোতে মালিকগণ কর্তৃক পরিবেশ ও প্রতিবেশ দূষণের প্রয়োজনীয় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর