বায়ু দূষণ রোধ প্রকল্পের অর্ধেকের বেশি ব্যয় অপ্রয়োজনীয় খাতে

, সংসদ

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-09-01 18:30:15

রাজধানীর বায়ু দূষণ কমাতে ৮০২ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ২০০৯ সালে। নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ (কেইস) প্রকল্প বা সুফল প্রকল্প নামে ওই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল ঢাকার বায়ু দূষণ কমিয়ে আনা। সেই লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্প ২০০৯ সালের মে মাসে বিশ্বব্যাংক অনুমোদন দেয় আর ২০১০ সালে মার্চ মাসে বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন লাভ করে। চলতি বছরের জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে।

প্রকল্পের সুফল মানুষ পেয়েছে কী না এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য চাওয়া হয়েছিল বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে। সেখানে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন সফলভাবে প্রকল্প শেষ হয়েছে। তাদের কথার সঙ্গে বাস্তবতার মিল খুঁজে পায়নি সংসদীয় কমিটি।

সংসদীয় কমিটির কার্যপত্রের বিশ্লেষণে দেখা গেছে কেইস প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কেইস প্রকল্পটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এমনকি প্রকল্পে যেসকল কম্পোনেন্ট ছিলো সকল কম্পোনেন্ট বিশ্বব্যাংক এবং আইএমইডি’র পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী কোয়ালিটি নিশ্চিত করে বাস্তবায়ন হয়েছে।

তাদের এই জবাবে সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী সিটি কর্পোরেশনের মূল উদ্দেশ্য জানতে চাইলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিটি কর্পোরেশনের মূল কম্পোনেন্ট ছিল মানুষের চলাচলের পথকে সুগম করা, বায়ু দূষণ কমানো এবং পথচারীদের জন্য নিরাপদ সড়ক পারাপার।

বৈঠকে কমিটি সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী প্রকল্পের পরিবেশ কম্পোনেন্টে ব্যয়ের চিত্র জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক, বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এস এম মঞ্জুরুল হান্নান খান জানান, প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ২৫ শতাংশ ব্যয় হয়েছে মেশিনারিজ খাতে, আর ৭৫ শতাংশ ব্যয় হয়েছে অন্যান্য খাতে। এই অন্যান্য খাতের মধ্যে আবার ২৬ শতাংশ পরিবেশ অধিদফতরের নতুন ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে।

এই প্রকল্পের মূল্য উদ্দেশ্য ছিল বায়ু দূষণ কমানো। সেখানে দূষণ না কমে বরং বৃদ্ধি পেয়েছে এ বিষয়ে কমিটি সভাপতির ব্যাখা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খরচ আইএমইডি’র অনুমোদন অনুযায়ী হয়েছে এবং বিশ্বব্যাংকও তদারকি করছে’।

কমিটি সভাপতি আরও বলেন, ‘প্রকল্পের ৫০ শতাংশের অধিক ব্যয় নন মেটেরিয়ালস খাতে। যার মাধ্যমে পরিবেশ উন্নয়নে সরাসরি কোন সুফল পাওয়া যাবে না’।

সোমবার (০৪ নভেম্বর) সংসদ ভবনে বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এভাবে কোটি কোটি টাকার প্রকল্পের অর্থ বিফলে যাওয়ায় কমিটির পক্ষ থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। পরবর্তি বৈঠকে এর ব্যাখা জানতে চাওয়া হয়েছে। সংসদীয় কমিটির কার্যপত্র পর্যালোচনা করে এতথ্য পাওয়া গেছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর