সাব রেজিস্ট্রার ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনার উদ্যোগ

, সংসদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-29 18:08:44

ভূমি সংক্রান্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত সাব রেজিস্ট্রার। সাধারণত ভূমির কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকার কথা। কিন্তু সেটা না হয়ে তারা কাজ করছেন আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হিসেবে। এতে ভূমি সংক্রান্ত অনেক কাজই আইন মন্ত্রণালয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। তাদের পদায়ন, পদোন্নতি সবকিছু আইন মন্ত্রণালয় করে থাকে। ভূমি সংক্রান্ত কাজের সুবিধার্থে দীর্ঘ দিন ধরে সাব রেজিস্ট্রারদের ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনার দাবি উঠেছে। এবার সেই দাবির পক্ষে চলছে যুক্তিতর্ক।

ভূমি মন্ত্রণালয় চায় তাদেরকে ফিরিয়ে এনে মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি বৃদ্ধি হোক। এজন্য প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় দীর্ঘদিন দাবি জানালেও আইন মন্ত্রণালয় সায় দিচ্ছে না। এর অংশ হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। কিন্তু বিশেষ কাজ থাকায় তিনি বুধবারের বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি। এখানেই থেমে নেই ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

আগামী বৈঠকে তারা আবারও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চান। সেখানে তার কাছে নিজেদের পক্ষের যুক্তি তুলে ধরবেন। এরপর আইন মন্ত্রীকে আহ্বান করা হবে। তাদের সম্মতি পেলেই মিলবে এর সমাধান।

বুধবার (১ জানুয়ারি) সংসদ ভবনে ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা ছিল।

বৈঠক শেষে কমিটি সভাপতি মো. মোকবুল হোসেন বার্তা২৪-কে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক কাজ শুরু করেছি। আজ সচিবের আসার কথা ছিল। কিন্তু তার অন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকায় আসেননি। আমরা মন্ত্রীকেও আমন্ত্রণ করব। তাদের কাছে যুক্তিতর্ক তুলে ধরব। তাছাড়া এটা ১৯৮৪ সালের পূর্বে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনেই ছিল। দেশের মানুষের স্বার্থে কাজের সুবিধার্থে সাব রেজিস্ট্রারদের ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনেই থাকা দরকার।’

এদিকে, ‘ক’ তফসিলভুক্ত সরকারি জমি পুরাতন লিজিং বহাল রাখার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এছাড়া যারা তৃতীয় পক্ষের কাছে লিজ দিয়েছে তাদের লিজ বাতিল করার জন্য মন্ত্রণালয়কে বলেছে সংসদীয় কমিটি। লিজকৃত জমি তৃতীয় পক্ষের কাছে লিজের তথ্য পাওয়ার সাথে সাথে তা বাতিল করার জন্য বলা হয়েছে।

‘ক’ তফসিল ভুক্ত সরকারি খাস জমি সংক্রান্ত প্রায় ৪ হাজার মামলা রয়েছে। এসব মামলার কারণে জমি উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সংসদীয় কমিটি চায় দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে খাস জমি উদ্ধার করে সরকারি খাতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। মামলা পরিচালনায় যে সকল উকিল রয়েছে তাদেরও কড়া নির্দেশনার কথা জানিয়েছে সংসদীয় কমিটি। যে জমি মামলায় জেতা সম্ভব না সেটা যেন আগে থেকেই যেন জানিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া মামলা নিয়ে দীর্ঘ সূত্রিতা না করার পরামর্শ দিয়েছেন আলোচকরা।

বৈঠকে বলা হয়-যে সকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লিজ গ্রহণ করার পর তা তৃতীয় পক্ষের নিকট হস্তান্তর করেছে কমিটি তাদের লিজ বাতিলের সুপারিশ করে।

বৈঠকে সরকারের যে সকল খাস জমি বেদখলে আছে তা উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি কর্তৃক নীলফামারী জেলার গুচ্ছগ্রাম পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, মনোরঞ্জন শীল গোপাল এবং নেছার আহমদ অংশগ্রহণ করেন।

এছাড়া বৈঠকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর