সংসদ ভবন থেকে: জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদকে স্মরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, তার (ফজলে হাসান আবেদ) স্ত্রী আমাদের একজন সক্রিয়কর্মী ছিলেন। আমি যখন প্রথমবার সরকারে আসি তখন তাকে বলেছিলাম ইউনিভার্সিটি করতে এবং একটা ব্যাংক তাকে দিয়েছিলাম। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও ব্র্যাক ব্যাংক তাকে অনুরোধ করে করিয়েছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমি জানতাম তার দক্ষতা… তার কাজের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছিল। মৃত্যুর কিছুদিন আগে আমার সাথে দেখা করেন। অবাক লাগে তিনি আমাকে বলেছিলেন—আমি তো বেশিদিন বাঁচব না, আমি সব কাজ বুঝিয়ে দিয়ে যাচ্ছি। মেয়েকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে গেলেন। ফজলে হাসান আবেদ দেশের জন্য যথেষ্ট সম্মান নিয়ে এসেছেন।
আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ডা. ইউনুস আলী সরকারের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একে একে আমাদের অনেক সাথী চলে যাচ্ছে, এটা দুঃখজনক। এটাই নিয়ম, জন্মিলে মৃত্যুবরণ করতে হবে। ডা. ইউনুস আলী ছাত্রলীগের সক্রিয়কর্মী ছিলেন। এমপি হয়েও তিনি ঘুরে ঘুরে মানুষের চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন, বিনামূল্যে ওষুধ দিয়েছেন। আরেক সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পীও অকালে চলে গেলেন। ভবিষতে তার দক্ষ রাজনীতিবিদ হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল।
বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের ৬ষ্ঠ অধিবেশনে সংসদ সদস্য ডা. ইউনুস আলী সরকারের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডা. ইউনুস আলী এত দ্রুত চলে যাবেন কল্পনাও করতে পারিনি। আমাদের বাপ্পী যুব মহিলা লীগের একজন সদস্য তিনি ৯ম এবং ১০ম সংসদের সংসদ সদস্য ছিলেন। চমৎকার বক্তৃতা দিতেন। ভবিষতে অত্যন্ত দক্ষ একজন রাজনীতিবিদ হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল।
বাপ্পীর স্মৃতিচারণ করে সংসদ নেতা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমাকে যখন গ্রেফতার করে মামলা দেওয়া হয়, মামলার সমস্ত কাজের সাথে সবসময় জড়িত ছিলেন। অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন।
সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে প্রথম যখন সরকার গঠন করি তখন সহকারী সামরিক সচিব ছিলেন। এরপর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সামরিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার মতো সৎ, দক্ষ একজন সামরিক অফিসার খুব কম পাওয়া যায়। যদিও মাঝখানে ৭ বছর আমি ক্ষমতায় ছিলাম না। আমার সামরিক সচিব ছিলেন বলে বিএনপি সরকার তার ওপর অনেক অত্যাচার করেছে। পরে আবার সরকার গঠন করে আমি তাকে নিয়ে এসেছিলাম। আমাদের পরিবারের সদস্যের মতোই ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শোক প্রকাশ করেন স্থপতি রবিউল হোসেনের প্রতি। তার সম্পর্কে বলেন, শুধু স্থপতিই ছিলেন না, ভালো কবি ও সাহিত্যিক ছিলেন। সাথে সাথে সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী অত্যন্ত দক্ষ একজন কূটনৈতিক ছিলেন, তাকেও হারিয়েছি।
কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ সংস্থা আল-হায়াতুল উলি লিল-জামায়াতিল কাওমিয়া বাংলাদেশের কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলীর মৃত্যুতেও গভীর শোক প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।