একাদশ সংসদ নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে রুমিনের ‘প্রশ্ন’

, সংসদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা,জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: | 2023-08-30 04:07:48

একাদশ সংসদ নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির দলীয় সংরক্ষিত সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। 

তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ ব্যতীত সকল রাজনৈতিক দল এমনকি সরকারের শরীক দলগুলো যে নির্বাচনের তীব্র সমালোচনা করেছে, সেই নির্বাচনের ন্যুনতম বিশ্বাসযোগ্যতা আছে বলে আমি মনে করি না।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের কিছু তথ্য তুলে ধরে রুমিন ফারহানা বলেন, রাষ্ট্রপতি তার ভাষণের শুরুতে বলেছেন সকল রাজনৈতিক দলের অংশ গ্রহণে ৩০ ডিসেম্বর অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদ গঠিত হয় এবং বর্তমান সরকারের উপর দেশ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়। রাষ্ট্রপতি আরেক জায়গায় বলেছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।

তিনি বলেন, এই নির্বাচন বিশ্বের বুকে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় নির্বাচনে জয়লাভের জন্য নানান কায়দায় কারচুপি হয়েছে। কিন্তু আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন বিশ্বের বুকে এই প্রথম। সম্ভবত, আগামীতে রাষ্ট্রপতির ভাষণে একই কথা আসবে, কারণ মানুষ নিজে যে কথা বিশ্বাস করে না, কিন্তু অন্যকে বিশ্বাস করাতে চায়, সেই কথাটি মানুষ বার বার বলে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার তার ম্যানডেটবিহীন ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে দেশের চরম অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে বলে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট শেয়ার বাজার থেকে। মানুষের আয়ের বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। উন্নতি যেটুক হয়েছে তা গেছে হাতে গোনা কিছু মানুষের কাছে।

তিনি বলেন, গণপূর্তের টেন্ডারে কি পরিমাণ ঘুষ, আর দুর্নীতি হয়, তা আমরা ক্যাসিনোকাণ্ড থেকে দেখেছি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের লুটপাটের খবর জাতীয় দৈনিকে আসে। দুর্নীতির সূচকে ক্রমাগত অবনতির দিকে যাচ্ছে। আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি, ১/১১-এর দরকার নেই। তখনই চলছিল তথাকথিত শুদ্ধি অভিযান। সেই অভিযানে ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির নেতাদের হাজার কোটি টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, ঘরে ঘরে কোটি কোটি টাকার বান্ডিল পাওয়া গেছে তাতেই বোঝা গেছে উপরের লেবেলে যারা আছে তাদের কী অবস্থা।

তিনি বলেন, ক্যাসিনোকাণ্ডের সীমাবদ্ধ শুদ্ধি অভিযানে পত্রিকায় এসেছে ক্যাসিনো সাঈদ ঢাকাতেই আছেন এবং সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তিনি অংশও নিচ্ছেন।

রুমিন বলেন, এই দেশে বিচার হয়, ফেসবুকে যেটা ভাইরাল হয়। প্রভাবশালীদের ক্ষেত্রে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে না। এর প্রমাণ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদককে পদচ্যুত করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। একই অবস্থা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজির ক্ষেত্রে। তিনি মেরে দেওয়া টাকা ফেরত দিয়েছেন, কিন্তু আইনি ব্যবস্থা দূরে থাকুক এখনও স্বপদে বহাল আছেন।

তিনি বলেন, আইন সরকার নির্দেশিত পথে চলে বলেই লিঙ্গ বয়স অসুস্থতা সামাজিক অবস্থান যে কোন একটি গ্রাউন্ডে জামিনের যোগ্য হলেও তিন বারের প্রধানমন্ত্রী জামিন পান না, তাকে ধীরে ধীরে ঠেলে দেওয়া হয় মৃত্যুর দিকে। সরকারের ইচ্ছামত চলে বলেই বিএনপি’র ৩৫ লাখ কর্মীর বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা থাকে।

পরে ডেপুটি স্পিকার তার বক্তব্যের দুটি শব্দ সংসদীয় প্রসিডিউর থেকে এক্সপান্স বা বাতিল করার ঘোষণা দেন। সেই শব্দ দুটি সম্পর্কে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, আপনি বক্তব্যের ভেতর- সরকারের মর্জিমত জাজমেন্ট এবং অবৈধ সরকার বলেছেন। এই কথাগুলো এক্সপান্স করা হলো।

এ সম্পর্কিত আরও খবর