জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: বর্তমান সরকার প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশ্বাসী বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে আন্তঃসংযোগ দক্ষিণ এশিয়ার দেশ সমূহের অধিকতর শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার অন্যতম চাবিকাঠি। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি কৌশলগত অবস্থানে এবং দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মিলনস্থলে অবস্থিত হওয়ায় আন্তঃসংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশেরই উপকৃত হবার সুযোগ বেশি বলে প্রতীয়মান হয়।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নের লিখিত জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী।
মন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র সমূহের সঙ্গে আন্তঃসংযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই ফলশ্রুতিতে, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতকে সড়ক ও রেলপথে পণ্য পরিবহণের সুবিধা প্রদানে বাংলাদেশ সম্মত হয়। একই রকম সুবিধা প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল ও ভুটানকে প্রদানেও বাংলাদেশ সম্মত আছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, এছাড়াও নেপাল, ভুটানকে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করতে দিতেও বাংলাদেশ সম্মতি প্রকাশ করেছে। আন্তঃসংযোগ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য রাষ্ট্র পর্যন্ত বিস্তৃত করার ব্যাপারে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এটি এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে পারে।
এ কে আবদুল মোমেন জানান, ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্যিক কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার গত ১০ বছরে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এ সকল উদ্যোগ গ্রহণের ফলে ভারত-নেপাল-ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে গত বছরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ প্রথমবারের মতো এক বিলিয়ন ডলারের সীমারেখা অতিক্রম করেছে এবং আমরা আশা করছি এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের প্রশ্নের লিখিত জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্বের ২১টি মিশনে চ্যান্সারি ও রাষ্ট্রদূত ভবন নির্মাণ করা হবে। যে সকল দেশে বাংলাদেশের চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, সেসকল দেশে চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ/ক্রয়ের নিমিত্তে স্ট্যান্ডার্ড ডিজাইন ভিত্তিক একটি বৃহৎ পরিকল্পনা প্রণয়ন করে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি জানান, বিদেশস্ত বাংলাদেশ মিশনসমুহের প্রস্তাব এবং দূতাবাসসমুহের কূটনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের নিজস্ব জমিতে ভবন নির্মাণ, নিজস্ব জমি না থাকলে জমি ক্রয় করে ভবন নির্মাণ/আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী হলে জমিসহ তৈরি ভবন ক্রয়ের জন্য একটি তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০১৬ সাল হতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনটি পর্যায়ে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে ৩১টি মিশনে নিজস্ব চ্যান্সারি ও রাষ্ট্রদূত ভবন নির্মাণ/ক্রয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায়ে রিয়াদ ও টোকিওতে নিজস্ব চ্যান্সারি ও রাষ্ট্রদূত ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হয়েছে।