জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে অদক্ষতা এবং অসচেতনতার কারণে সংঘটিত বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত ৩৮ জন নিহত এবং ৭২ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেছেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ প্রতিরোধসহ নিরাপদে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার, সিএনজি সিলিন্ডারসহ যেকোনো ধরনের গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের ক্ষেত্রে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য লুৎফুন নেসা খানের প্রশ্নের লিখিত জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী জানান, গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিধিমালা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে কী না, যাচাইয়ের জন্য সিলিন্ডার মজুদের স্থান, সিলিন্ডার পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়মিতভাবে পরিদর্শন করা হচ্ছে। উক্ত বিধি-বিধানসমূহ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এছাড়া এ বিষয়ে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিএনপির দলীয় সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের লিখিত জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, বিগত ৫ বছরে অর্থাৎ ২০১৫ হতে ২০১৯ পর্যন্ত ভোক্তা পর্যায়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য তিনবার সমন্বয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে একই আদেশে দুই ধাপে মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে। তবে পুনরায় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের আপাতত নেই।
সংসদের সাবেক হুইপ শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের লিখিত জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুতের অপচয় ও অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার রোধে সরকার নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। ফলে বিদ্যুতের সিস্টেম লস গত অর্থবছরের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। সরকারের সঠিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও নিবিড় তদারকি এবং প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুতের অপচয় হ্রাস পেয়েছে। বিদ্যুতের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ করার জন্য মোবাইল কোর্ট ও ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের লিখিত জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশীয় গ্যাস ক্ষেত্রসমূহ হতে বর্তমানে দৈনিক ২ হাজার ৫৭০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। আমদানিকৃত এলএনজিসহ (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) বর্তমানে দেশে দৈনিক ৩ হাজার ১৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।
তিনি জানান, সমুদ্রাঞ্চলে তেল/গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চারটি ব্লকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানির সঙ্গে উৎপাদন বন্টন চুক্তি (পিএসসি) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সকল ব্লকে সম্পাদিত দ্বি-মাত্রিক এবং ত্রি-মাত্রিক জরিপের ভিত্তিতে অগভীর সমুদ্রের ৩টি ব্লকে ২০২১ সালের মার্চ মাসের মধ্যে চারটি অনুসন্ধান কূপ খনন করা হবে। এছাড়া নতুন বিডিং রাউন্ড আহ্বান করার কার্যক্রম হিসেবে মডেল পিএসসি অনুমোদিত হয়েছে।