জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: বিমানের দুর্নীতি ও ব্যয় সংকোচনের জন্য প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো হয়েছে, যার ফলে বিমানের দুর্নীতি বহুলাংশে কমে এসেছে বলে সংসদে জানিয়েছেন বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী মাহবুব আলী।
তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ বিমানের মোট আয় ছিল ৫ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা, আর ব্যয় হয় ৫ হাজার ৭৭৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। ফলে বিমানের নিট লাভ হয়েছে ২১৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনিরীক্ষিত নিট লাভ হয়েছে ৪২৩ কোটি টাকা।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের আবুল কালাম আজাদের লিখিত প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান মন্ত্রী।
পর্যটনমন্ত্রী আরো জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানের নিজস্ব ১২টি এবং নিজকৃত ৬টি বিমানসহ মোট ১৮টি উড়োজাহাজ আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ যাতায়াত করছে, যা পূর্ববর্তী যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। এছাড়া বিমানের যাত্রীদের ব্যাগেজ ডেলিভারির সময় প্রথম ব্যাগেজ ১৮ মিনিট এবং শেষ ব্যাগেজ ৬০ মিনিট করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার ফলে যাত্রী সেবার মান বেড়েছে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে বিমান পরিবহন মন্ত্রী মাহবুব আলী জানান, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)-এর আওতায় ৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং ৫টি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর পরিচালিত হচ্ছে। এরমধ্যে একমাত্র হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাভজনক অবস্থায় রয়েছে। চট্টগ্রামের হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ব্রেক ইভেন পয়েন্টে (সম আয়, ব্যয়) আছে। অবশিষ্ট ৭টি বিমানবন্দরের পরিচালন ব্যয়ের চেয়ে আয় অনেক কম। ফলে জাতীয় স্বার্থের বিষয় বিবেচনা করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আয় থেকে ভর্তুকি দিয়ে অলাভজনক বিমানবন্দরসমূহকে পরিচালনা করতে হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, বিভিন্ন বিমানবন্দরে বর্তমানে বেবিচক-এর নিজস্ব তহবিলের আওতায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। প্রতি বছর গড়ে ৩৫০ কোটি টাকা কর্পোরেট ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি, নন-ট্যাক্স রেভিনিউ (এনটিআর) বাবদ প্রতি বছর ১২০ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে দেওয়া হচ্ছে এবং এর পরিমাণ প্রতি বছর ন্যূনতম ১২% হারে বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
এছাড়া বেবিচক’র বিদ্যমান অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী বর্তমানে ৩৭১৬ জনবলের বেতন ভাতা, ওভার টাইম, লাঞ্চ ভাতাসহ অন্যান্য ব্যয়ভার নিজস্ব তহবিল থেকে নির্বাহ করা হয় বলে জানান মন্ত্রী। এ প্রেক্ষাপটে নোয়াখালী জেলায় একটি আধুনিক বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই বলেও জানান তিনি।