মাদকমুক্ত শিক্ষিত জাতি গঠনে এবার কড়াকড়ি আরোপ করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আগে এবং চূড়ান্ত পরীক্ষায় অবতীর্ণ হাওয়া আগে ডোপ টেস্ট (মাদকাসক্ত কিনা জানার বিশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা) বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়েছে সংসদীয় কমিটি থেকে।
সেই সুপারিশের আলোকে এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে সংসদীয় কমিটিকে অবগত করেছে মন্ত্রণালয়। ফলে এখন থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গেলে অবশ্যই ডোপ টেস্টে উত্তীর্ণ হতে হবে। শুধু তাই নয়, দেশের সব সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে প্রবেশ করতে হলেও ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক।
এজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আওতাধীন সব অধিদফতর/সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে আলোকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা থেকে ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সব শ্রেণির সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় যেসব ধাপ পার হতে হয়, সেগুলোর সঙ্গে ডোপ টেস্ট অন্তর্ভুক্তকরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে চলমান মাদক বিরোধী অভিযান নিয়ে আলোচনা হয়। এ অভিযানে সামাজিক আন্দোলন জোরদার, সার্বজনীন সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে মাদকের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া কারাগারে মাদকাসক্তদের পৃথকভাবে রাখারও সুপারিশ করা হয়।
রাজনৈতিক পদধারী যারা আটক হচ্ছেন, তাদের বিষয়ে গভীর তদন্ত করতে বলা হয়েছে। এদের পেছনে যারা মদদ দিচ্ছেন, তাদেরও খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থিদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা/মেট্রোপলিটন এলাকার সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সে নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে কমিটিকে বলা হয়েছে, সার্বিক কার্যক্রম পুলিশের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
এছাড়া গ্রামীণ এলাকার থানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসনের ব্যবস্থা রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কর্মরতের বেতনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাসা ভাড়া চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে। কোস্টগার্ডের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য সেন্টমার্টিন পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মো. হাবিবর রহমান, সামছুল আলম দুদু, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, পীর ফজলুর রহমান, নূর মোহাম্মদ এবং সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ অংশ নেন।
এছাড়া বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।