আর মাত্র কয়েকঘণ্টা বাদেই শুরু হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন। এরইমধ্যে ঢাকাসহ সারাদেশ ব্যাপী সাজসজ্জা শেষ হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে নানামুখী অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করা হয়েছে।
তবে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মূল আয়োজন সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বিপুল জনসমাগম করে যে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিলো সেটি হচ্ছে না। তাই সে অনুষ্ঠানের কিছু অংশ দেখানো হবে জাতীয় সংসদ চত্বরে। প্যারেড গাউন্ডের অনুষ্ঠান স্থগিত হলেও রেকডিং করে সেই অনুষ্ঠান সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্থাপিত জায়েন্ট স্কিনের মাধ্যমে দেখানো হবে।
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ রাত ৮ টায় জন্মগ্রহণ করে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আনন্দঘন সেই সময় স্মরণীয় করে রাখতে জন্মশতবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান রাত ৮টায় আতশবাজী ও ফায়ারওয়ার্কসের মাধ্যমে শুরু হবে অনুষ্ঠানমালা। প্রায় ৫ থেকে ৭ মিনিট ধরে চলবে আতশবাজী। পুরো অনুষ্ঠানটি চলবে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে।
যেহেতু করোনাভাইরাসের কারণে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। তাই সংসদের দক্ষিণ প্লাজার অনুষ্ঠানও সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। ওখান থেকে নির্ধারিত গণমাধ্যম সরাসরি সম্প্রচার করবে। আর সেই অনুষ্ঠান টিভির মাধ্যমে সারাদেশের মানুষ উপভোগ করবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি বাণী দেবেন।
সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় পিক্সেল ম্যাপিং এর মাধ্যমে দেখানো হবে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ের ভাষণের উদ্ধৃতি ও বিভিন্ন মুহূর্ত। সেখানে ১৯৫২ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাগুলো তুলে ধরা হবে। এছাড়া আলোকসজ্জার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠবে। সঙ্গে থাকবে লেজার শো।
১৭ মার্চের অনুষ্ঠানকে ঘিরে পুরো সংসদ এলাকা নতুনভাবে সজ্জিত হয়েছে। লাইটিং ও লেজার শো'র মাধ্যমে ভেসে উঠছে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা। সংসদের লেকের মাঝখানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের সেই আঙুল উচিয়ে দেওয়া ভাষণের প্রতিচ্ছবি লেজার শো'র মাধ্যমে দেখানো হবে। এছাড়া সংসদের দক্ষিণ পশ্চিম কোণের মাঠে স্থাপন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্নার।
সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় পিক্সেল ম্যাপিংয়ের বিশাল ক্যানভাসে ভেসে উঠবে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ- এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে সংখ্যায় আমরা সংখ্যায় বেশি হলেও, একজনও যদি হয় তার ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেব। আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না এদেশের মানুষের অধিকার চাই। বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ের ভাষণের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হবে।
বিশাল এই আয়োজনকে ঘিরে পুরো সংসদ চত্বরের চিত্র পাল্টে গেছে। সংসদের লেকের পাড়ে প্রতিটি দেয়ালে লাইটিংয়ের মাধ্যমে নৌকার প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া সংসদে প্রবেশের প্রতিটি পথেই বিভিন্ন রঙয়ের পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছে।
সংসদ চত্বরে পুরো অনুষ্ঠান সাজানোর কাজ পেয়েছে এশিয়াটিক সোসাইটি। এশিয়াটিক সোসাইটির কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, “জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানটি রেকডিং হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানালা সংসদের স্থাপিত প্রজেকশনের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। এই অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ৫-৭ মিনিটের আতশবাজি, ফায়ারওয়াকর্স ও লেজার শো। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলবে অনুষ্ঠানটি।