স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি অনিয়ম নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আপনি তো লোহার সিন্দুকে ঢুকে গেছেন। আপনি লোহার সিন্দুক থেকে বের হন। আপনি গোপন জায়গা থেকে মাঝে মাঝে বিবৃতি দেন এটা মানুষ গ্রহণ করে না।
সোমবার (২৯ জুন) দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে অর্থবিল-২০২০ পাসের আগে সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে এভাবেই সমালোচনা করেন তিনি।
গল্পের ছলে মুজিবুল হক চুন্ন বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিভাগে একটা পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি হয়েছে, সেই পদের নাম হলো সফটওয়্যার ডেভেলপার। সেই পদে দরখাস্ত করেছেন বিল গেটস এবং জুকারবার্গ। দরখাস্ত করার পর সিভি পাঠিয়েছেন, যখন ইন্টারভিউ হবে বিল গেটস বুদ্ধিমান লোক সে বাংলাদেশের সমস্ত পরিস্থিতি জানলেন। ইন্টারভিউতে তাকে জিজ্ঞেস করা হলো রবীন্দ্রনাথের জন্ম কোথায়? কবি নজরুল কে? তিনি এটা পারলেন এবং তিনি চাকরি পেলেন। জুকারবার্গ পারলেন না, বিল গেটেসের চাকরি হলো।
মুজিবুল হক বলেন, এরপর বিল গেটস তার অফিসে বসলেন। তখনই সবাই তাকে জিজ্ঞেস করল আপনি এতো বড় লোক আপনি কেন চাকরিতে গেলেন? তখন বিল গেটস বললেন আমরা একটা স্বপ্ন ছিল চাকরি করার, পাইনি দেখে ব্যবসা করে এতো পয়সা আয় করেছি। এখন আমার সেই স্বপ্নের চাকরি পেয়েছি বাংলাদেশে। তিনি সবার থেকে বিদায় নিয়ে আসলেন, বাংলাদেশ বিমানবন্দরে সাংবাদিকার জিজ্ঞেস করলেন আপনি কি স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশে আসলেন, বিষয়টা কি? বললেন স্বাস্থ্য অধিদফতর এমন একটা বিভাগ, যে এখানে চারটা ওয়েবসাইড উন্নয়ন করতে ১০ কোটি ৫০ লাখ লেগেছে। ৫টা ডাটাবেজ তৈরি করতে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা লেগেছে এবং ৫টা কম্পিউটার কিনতে খরচ ৫৫ কোটি টাকা যা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে দামি।
তিনি আরও বলেন, যে বিভাগে একজন পিয়নের বউ দেড় হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে যায়। এই চাকরি করলে তো টাকা আর ব্যবসা করে কষ্ট করতে হয় না, সেজন্য আমি বিল গেটস চাকরিতে যোগ দিতে বাংলাদেশে যাচ্ছি।
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশে করে বলেন, আপনি লোহার সিন্দুকে ঢুকে গেছেন। লোহার সিন্দুক থেকে বের হন। আপনি হাসপাতালে যান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান, রোগীর কাছে যান, ডাক্তার-নার্সরা রাত-দিন কাজ করছেন। ওনাদের কাছে যান। আপনি মাঝে মাঝে গোপন থেকে বিবৃতি দেন। এটা মানুষ গ্রহণ করছে না।
তিনি বলেন, আমরা এলাকায় যাচ্ছি, হাসপাতালে যাচ্ছি। আমাদের তো রোগ হতে পারে। আপনি বের হন। এভাবে চলে না।
বাজেটের সমালোচনা করে বলেন, গত বাজেটে রাজস্ব আয়ের মধ্যে এনবিআর থেকে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ আজ (২৯ জুন) পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ২ লাখ ৫ বা ১০ হাজার কোাট টাকা। অর্থাৎ প্রায় ২০-২৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় হয়নি। আগামী বাজেটে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে এটা আদায় করবেন কিভাবে? আদায় করতে হলে রাজস্ব বিভাগের কর্মদক্ষতা আরও ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করতে হবে।