ঢাকা-১৭ আসন ছিলো আমাদের, এই আসনটি আমরা মহাজোটকে ছেড়ে দিয়েছি। আমরা আশা করছি, ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচন করতে পারবেন। এ ব্যাপারে মহাজোটের সঙ্গে আলোচনা হবে বলে জানান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
শনিবার (৮ আগস্ট) জাপার বনানী অফিসে ঢাকা-১৭ আসনের ৭টি থানার জাতীয় পার্টি নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা-১৮ উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মাঠে থাকবে। একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে জাতীয় পার্টি প্রতিটি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছে। যারা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর সাথে কাজ করবে না, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জিএম কাদের বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন দেশ ও মানুষের স্বার্থে সংগ্রাম করেছেন। বঙ্গবন্ধুর অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংসদেই বলেছিলেন, জাতীয় পার্টি বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনকের মর্যাদা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিশেষ কারণে সেটা করতে পারেননি। তবে, সংসদে জাতির জনক মর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে জাতীয় পার্টি ভোট দিয়েছিলেন। জাতির জনক কোনো দলের নয়, জাতির জনক সারা দেশের সকল দলের। তাই ১৫ আগস্ট জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় সরকার প্রধান না চাইলে কিছুই হবে না। তাই রাজপথে হরতাল ও জ্বালাও-পোড়াও এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কোনো দাবি আদায় করা সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হিসেবে ইতিবাচক রাজনীতি করছে। সংসদ ও রাজপথে আমরা যুক্তি দিয়ে কথা বলছি। আমরা দেশ ও জনগণের পক্ষে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরছি। সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টির রাজনীতি গ্রহণ করেছেন, তাই জাতীয় পার্টির সমর্থন বেড়েই চলেছে। দেশের মানুষ বিশ্বাস করে, জাতীয় পার্টিকে দায়িত্ব দিলে দেশ ও জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে হবে।
এসময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, করোনা ও বন্যার কারণে দেশে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। জাতীয় পার্টি ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দলই সাধারণ মানুষের পাশে নেই। রাজনৈতিক শূন্যতায় জাতীয় পার্টি জনগণের দল হিসেবে আবারও প্রমাণ রেখেছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে সরকার আসে সরকার যায় কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্যেও কোনো পরিবর্তন হয় না। তাই জাতীয় পার্টিকে আরও শক্তিশালী করে গণমানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হবে। দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে চেয়ে আছে তৃতীয় শক্তির দিকে।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির সভাপতি এস.এম. ফয়সল চিশতী, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সেন্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। উপস্থিত ছিলেন- উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমানত হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, শফিকুল ইসলাম শফিক, আহসান আদেলুর রহমান এমপি, মোস্তফা আল মাহমুদ, সুলতান আহমেদ সেলিম, যুগ্ম মহাসচিব ফকরুল আহসান শাহজাদা, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মো. নাসির উদ্দিন সরকার, সৈয়দ মঞ্জুরুল হোসেন মঞ্জু, হুমায়ুন খান, আনোয়ার হোসেন তোতা, আনিস উর রহমান খোকন, কাজী আবুল খায়ের, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য- সুলতান মাহমুদ, জাকির হোসেন মৃধা, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে ঢাকা-১৮ আসনটি শূন্য হয়। তিনি গত ৯ জুলাই ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।