ড.কামাল, বি. চৌধুরী, রব, মান্নাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাস্যরস

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 17:54:20


‘সুসময়ে সরব আ স ম আব্দুর রব’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথাটি বলার সঙ্গে সঙ্গেই গণভবনে সাংবাদিক সম্মেলন কক্ষে হাসির রোল। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) আ স ম আব্দুর রবকে ছাত্রজীবন থেকে এভাবেই চিনতেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।


তিনি বলেন, রব সাহেব একসময় আমাদের ছাত্রলীগ করত । ‘সুসময়ে সরব আ স ম আব্দুর রব। আমরা এই ছাত্রজীবনেই তাকে সবসময় এটাই বলতাম। মানে, সময়ে সরব অসময়ে নীরব আ স ম আব্দুর রব। তো উনি এখন সরব হচ্ছেন সেটা ভালো কথা।’

রোববার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। নেপালে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলন নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

নাগরিক ঐক্যের আহ্ববায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনিও আমাদের পার্টি করতে এসেছিলেন। কিন্তু উনি এখানে খুব একটা স্বস্তি ফিল করেন নি। কারণ সারাজীবন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লিখে অভ্যস্ত। যখন আমাদের পার্টি করতে আসল তখন আমি বললাম, আপনার হাত এত ভালো এত সুন্দর লেখেন তা আপনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এতদিন লিখেছেন,  এখন একটু পক্ষে লেখেন। দেখা গেল যে উনি পক্ষে লিখতেই পারেন না।’

উপস্থিত সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখে আবারো মৃদু হাসির রোল।


‘উনাকে পক্ষে লিখতে বললেই- মান্না...জুড়ে দেয় কান্না। গণভবনে আবারো উচ্চ হাসির রোল। প্রধানমন্ত্রীও হাসতে হাসতে আরও বলেন, তা কি করা যাবে উনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।’


সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন ও যুক্তফ্রন্ট ঐক্যের নেতা বি. চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্না, আসম আব্দুর রবদের র্নিবাচনী জোটকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি শুধু স্বাগত জানান নি, সেই সঙ্গে যুক্তফ্রন্ট নেতাদের অতীত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সাধুবাদ জানাই তারা সব মিলে একটা জোট করছে। এটা ভালো। বাংলাদেশে তো পার্টি দুইটা। একটা আওয়ামী লীগ আরেকটা অ্যান্টি আওয়ামী লীগ। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ বিরোধী। আওয়ামী লীগ বিরোধীদের তো একটা জায়গা লাগবে যাওয়ার। কাজেই এ জন্য তারা যে ঐক্য করেছেন আমি সাধুবাদ জানাই। যে ঐক্যটা থাক। ভালো হোক’।

ড. কামাল আদৌ নির্বাচন চান কি না সেই প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ড. কামাল এবং গং যারা এক হয়েছে তারা আদৌ নির্বাচন চায় কি না এখানেই আমার প্রশ্ন। কারণ বাংলাদেশে তো একটা শ্রেণি বসেই থাকে তারা মনে করে, কোন অসাংবিধানিক অনির্বাচিত এরকম কিছু যদি ক্ষমতা দখল করতে পারে তাহলে তো একটা পতাকা পেতে পারে, তাদের একটু গুরুত্ব বাড়ে।’

আনকনটেস্টেড হওয়া সাংবিধানিকভাবেই আছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ড. কামালও তো নির্বাচনে আনকনটেস্টেড জিতে আসছিলেন। জাতির পিতা একটা সিট ছেড়ে দিয়েছিলেন তার জন্য। সে জাতির পিতার ছেড়ে দেওয়া সিটে উনি ইলেকশন করলেন, পেপার সাবমিট করলেন, কেউ কনটেস্ট করেনি, নিজেই আনকনটেস্টেড জিতে এলেন। এখন সেই আনকনটেস্টেড এমপি, আজ নিজেকে সংবিধান প্রণেতাও বলেন, আবার এখন দেখি সেই সংবিধানও তিনি মানতে চাননা।


বি. চৌধুরী প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি একসময় আমাদের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এবং স্বাধীনতার পর পর ‘আপনার ডাক্তার’ প্রোগ্রাম টিভিতে হত। এটা কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলছিলেন উনাকে একটা করতে।  সেখান থেকে তিনি খুব ভালো জনপ্রিয়তা পান এবং পঁচাত্তরের পরে তিনি বিএনপি করতে যান। কিন্তু খালেদা জিয়াও তো তাকে সম্মান দেননি। বঙ্গভবন থেকে বের করে রেল লাইনের উপরে দিয়ে দৌঁড় দেওয়ালো। উনার ভাগ্যে সেটাই জুটল।


বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, কাদের সিদ্দিকী তিনিও আমাদের সঙ্গে ছিলেন। ৯৬ সালের পার্লামেন্টে হঠাৎ তার মাথায় কে কি ঢুকালো জানি না তিনি রিজাইন করল। স্বতন্ত্র ইলেকশন করে আসলেন যে, আওয়ামী লীগের এমপিরা তাকে ভোট দেবেন, বিএনপির এমপিরাও তাকে ভোট দেবে উনি প্রধানমন্ত্রী হবেন। ’


‘এই মাকাল ফলটা কে দেখালেন জানি না। সেই আশা নিয়ে সে পদত্যাগ করে ইলেকশন করতে গিয়ে নৌকা ছাড়া ইলেকশনে জিততে পারলেন না। কারণ মানুষ তখন নৌকায় ভোট দিয়েছেন, এজন্য তিনি ইলেকশন জিতে আসতে পারলেন না।’


সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের,পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর