আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেছেন, পাকিস্তানের প্রতিনিধি আর তাদের আন্তর্জাতিক মোড়লদের প্রতিনিধি খন্দকার মোশতাক ও খুনি জিয়াউর রহমান ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। যে খুনিরা ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিলেন, সেই অপশক্তিই একুশে আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন।
শনিবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর নয়াবাজার হাজী জুম্মন কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের অন্তর্গত বংশাল থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্মরণ করে এসএম কামাল বলেন, সেদিন কারা হত্যা করেছিল? যে পাকিস্তান বঙ্গবন্ধুর কাছে পরাজয় বরণ করেছিল। যে পাকিস্তানের সৈনিকরা নাকে খত দিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। যে পাকিস্তানের তথাকথিত লৌহমানব আইয়ুব খান পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। সেই পাকিস্তানের প্রতিনিধি আর তাদের আন্তর্জাতিক মোড়লদের প্রতিনিধি খন্দকার মোশতাক আর খুনি জিয়াউর রহমান সেদিন ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশ আবার পাকিস্তানের ধারায় ফিরে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে শুধু হত্যা করেনি, হত্যা করেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে, হত্যা করেছিল বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে। হত্যা করেছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা করার পর কেমন হয়েছিল বাংলাদেশ প্রশ্ন তুলে এসএম কামাল বলেন, সারা দেশের ক্যান্টনমেন্টগুলোতে সিপাহী জোয়ানদের স্ত্রী সন্তানদের আর্তনাদ আহাজারিতে ভারী হয়ে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা, গুম-খুন করা হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সেই অন্ধকার থেকে আমার-আপনার প্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। আবার দেশের মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, গণতন্ত্রের অধিকার ফিরিয়ে দেন। তিনি আরও বলেন, যে বাংলাদেশ ছিল অন্ধকারের বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশে মানুষের ভোটের অধিকার ছিল না, যে বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই শোক দিবস পালন করছি। কিন্তু ২০০৪ সালের ২১ আগস্টেরও কথা আপনারা একবার স্মরণ করেন। সেদিন আমিও ছিলাম, আমিসহ অনেকেই গ্রেনেডে আহত হয়েছেন। সেদিন ষড়যন্ত্র ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করার। যে শক্তি ওই ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিলেন, তার পরিবারকে হত্যা করেছিলেন, সেই অপশক্তিই শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। আপনাদের দোয়া ভালোবাসায় আপনারা সেদিন সমাবেশে ছিলেন তারা দেখেছেন, আল্লাহ কিভাবে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছেন।
এসএম কামাল বলেন, আমাদের অহংকার আমাদের গর্ব, আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি। আমাদের অহংকার আমরা শেখ মুজিবের কর্মী। যে শেখ মুজিব মানে বাংলাদেশ। আমরা সেই দলের কর্মী। আমরা অহংকার করি, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আওয়ামী লীগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। আর আজকে আমাদের অহংকার বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে তিনি মানুষের কথা ভাবেন। মানুষের কথা চিন্তা করেন। স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন। সাহসিকতার সাথে, দক্ষতার সাথে সকল ক্রাইসিস অতিক্রম করেন।
বংশাল থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সভাপতি গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। এছাড়া ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমসহ আরও অনেকে।