শুধু নেতা-কর্মীদেরই নয়, গণসংযোগে আওয়ামী লীগের বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন ধানের শীষের প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ঝামেলা করলেও আমরা কোনো ঝামেলায় জড়াতে চাই না। কারণ, আমাদের সাথে ঢাকা-১৮ আসনের ভোটাররা আছেন। তারা আগামী ১২ নভেম্বর ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। দেখবেন, যেখানেই ধানের শীষের গণসংযোগের ন্যূনতম সুযোগ হচ্ছে, সেখানেই গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণেই আওয়ামী লীগ ভীত হয়ে এসব হামলা করছে।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) নিজ নির্বাচনী কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিএনপি প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন এসব কথা বলেন।
এ সময় তার সাথে ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের উত্তরের সভাপতি ফকরুল ইসলাম রবিন, সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রিয়াজ প্রমুখ।
ঢাকা-১৮ আসনের বিএনপি নেতৃবৃন্দ ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, নেতাকর্মীরা জানপ্রাণ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এবং শেষ পর্যন্ত নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে, ভোটাদের নিজের ভোট স্বাধীনভাবে পছন্দের প্রার্থীকে দিতে পারে সেই সুযোগ করে দেবে। আমার বিশ্বাস করি, বিএনপি সরকার এই এলাকায় বিগত সময়ে যে উন্নয়ন করেছে তার জন্যই ধানের শীষে তারা ভোট দেবেন।
প্রতীক পাওয়ার পর গত ২৩ অক্টোবর জুমার নামাজ আদায় করে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ১ নং সড়ক থেকে ধানের শীষের পক্ষে হাজার হাজার নেতাকর্মী সমর্থকদের সাথে নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন বিএনপি প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, এরপর থেকে প্রতিটি গণসংযোগে আওয়ামী লীগ বাধা দিচ্ছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমাদের নেতাকর্মীদের প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন প্রার্থী হিসেবে আমাকেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। তাহলে এটা কেমন নির্বাচন? অথচ প্রতিটি কর্মসূচি দেওয়ার আগে পুলিশের অনুমতি নেওয়া হচ্ছে।
এই জোনের পুলিশের ডিসিকে গত দুই দিন ধরে ফোন দিয়ে যাচ্ছি তিনি রিসিভ করছেন না। আসলে আওয়ামী লীগ যাচ্ছে যাতে করে ভোটের দিন ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট না দিক।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে এস এম জাহাঙ্গীর বলেন, ঢাকা-১৮ আসনে ধানের শীষের যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে-এটা দেখে যদি তারা মনে করে এখানে তারা পরাজিত হবে তাহলে সমস্যা কোথায়? সরকারে তো তারাই থাকছেন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনী বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা-১৮ আসনে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। আমার যেখানে কর্মসূচি দিচ্ছি সেখানে তারা পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছেন। আমাদের বক্তব্য যতই বাধা দেওয়া হোক শেষ পর্যন্ত আমরা মাঠে আছি। আমরা গণতন্ত্র ফিরেয়ে আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা মনে করি, ক্ষমতা পরিবর্তনেরও একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্বাচন। আশা করি নির্বাচন কমিশন, তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে দিনের ভোট দিনেই করবেন। এবং কমিশন একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ভয়হীন নির্বাচনী পরিবেশ উপহার দেবেন।
আওয়ামী লীগ গায়ে পড়ে ঝামেলা করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে এস এম জাহাঙ্গীর বলেন, গতকাল আমার বাসার সামনে এসে অনেকক্ষণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল করেছে। তখন সেখানে আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিল।
আসলে আওয়ামী লীগ গায়ে পড়ে ঝামেলা করতে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার নির্দেশ দেওয়া আছে। আমাদের একমাত্র শক্তি হচ্ছে জনগণ। অতএব, আমাদের কোনো চিন্তা নেই। ভোট হলে ধানের শীষই এ আসনে জয়লাভ করবে।
ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে বারবার প্রচারণায় বাধা দেওয়া, নেতাকর্মীদের ওপর হামলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সাথে আজ বুধবার বিকাল ৩টায় বৈঠক করবেন বলে জানান এস এম জাহাঙ্গীর। এ সময় তার সাথে থাকবেন, ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনের সমন্বয়ক আব্দুস সালাম ও সাবেক এমপি নাজিম উদ্দিন আলম প্রমুখ।