সংখ্যালঘুদের জন্যও মাদ্রাসা শিক্ষাকে উন্মুক্ত করার আহ্বান জাফরুল্লাহ’র

, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 14:34:22

মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেন, সবার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক। সেখানে সংখ্যালঘুরাও শিক্ষা নিতে পারবে। তাদের ধর্ম পরিবর্তন করতে হবে না কিন্তু শিক্ষা নিতে হবে। এতে মুসলমানদের ভালো হবে। তারা (সংখ্যালঘুরা) ইসলামের ভালো সাইট দেখতে পারবে। তাদের ইসলামফোবিয়াটা কমে যাবে।

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এক আলোচনায় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের অবিসংবাদিত মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ১৪০তম জন্মদিন উপলক্ষে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

ভাসানী অনুসারী পরিষদ, ছাত্র, শ্রমিক ও যুব অধিকার পরিষদ, রাষ্ট্রচিন্তা ও গণসংহতি আন্দোলন এ সভার আয়োজন করে।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, স্বৈরাচার যেখানে বাসা বাধে সেখানে দেশ প্রেম ভুলিয়ে দেয়া হয়। আজ স্বাধীনতার কথা বলব। সেখানে মওলানা ভাসানীকে স্মরণ করবে না। তার নাম উচ্চারণ করবে না, তা তো হতে পারে না। স্বৈরাচার সরকারের নিয়ম হচ্ছে যারা দেশের জন্য কিছু করেছে, দেশে নিয়ে কিছু করেছে তাদের নাম মুছে ফেলা। শুধুমাত্র এক ব্যক্তিকে মহৎ করে দেখায় তারা। স্বাধীনতার কথা বলব, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলব কিন্তু তাজউদ্দিনের কথা বলবো না, এটা হতে পারে?

দেশের চলমান ভাস্কর্য ইস্যু নিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, হঠাৎ করে হুজুররা এত শক্তি পেল কোথায়? সাহস পেল কোথায়? তাদের কে মাঠে নামালো? এটারও ইতিহাস আছে। মার্কিন নির্বাচনে যখন জো বাইডেন নির্বাচিত হল তখন অন্যান্যদের মত বাংলাদেশ সরকারও অভিনন্দন জানিয়েছে। সেখানে সবার উত্তর এসেছে কিন্তু হাসিনার উত্তর আসেনি। কারণ জো বাইডেন জানেন রাতের আঁধারে ভোট ডাকাতি করে সে (শেখ হাসিনা) গণতান্ত্রিক সরকার নয়। তাই দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য হুজুরদেরকে মাঠে নামানো হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ টুপি মাথায় ভাস্কর্য বিরোধী অবস্থানে মাঠে নামল। যাতে তারা (জো বাইডেন) জঙ্গিবাদ মৌলবাদের উত্থান দেখে ভয় পায়।

তিনি বলেন, আজ আমাদের কঠিন দায়িত্ব, আলেমরা জ্ঞানীগুণী মানুষ কিন্তু অনেক সময় তারা একচোখা হয়। আন্দোলন করছেন মূর্তি আর ভাস্কর্য নিয়ে। এটা কোরানের কোন জায়গায় লেখা নেই। মূর্তি পূজা করতে নিষেধ আছে কিন্তু মূর্তি ভাঙতে বলে নাই। ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলন থেকে সরে এসে হুজুরদেরকে জনগণের অধিকারের আন্দোলন, ন্যায়-নীতির আন্দোলনের আসার আহ্বান জানান তিনি।

আলোচনা সভা। ছবি: বার্তা২৪.কম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, স্বাধীনতার ইতিহাস থেকে মওলানা ভাসানীকে বিলীন করে দেওয়ার চেষ্টা হয়। এমনকি তাজউদ্দীন সাহেবকে বিলীন করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ভাসানীই বাংলাদেশ, এটা বলতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর বলেন, সরকার যে অবস্থায় আছে, সেখান থেকে সহজেই স্কিপ করার সুযোগ নেই।সরকার যে দাঁড়িয়েছে, সেখান এক্সিটের রাস্তাই হলো অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের রূপরেখা ঠিক করে সেটিকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা। এজন্য সরকারকে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনা করার আহ্বান জানান নূর।

নূর জানান, চারটি সংগঠন মিলে একটি বৃহত্তর ঐক্যের দিকে এগুচ্ছেন তারা। তার মন্তব্য, ‘আমরা চারটি সংগঠন মিলে বৃহত্তর মুক্তির লক্ষ ও উদ্দেশ্য নিয়ে এগুচ্ছি। বৃহত্তর ঐক্য আর আন্দোলন ছাড়া এই জাতির মুক্তি হবে কিনা আমি জানি না।’

ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নঈম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন, গণসংহতির আবুল হাসান রুবেল, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গণমাধ্যম উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর