‘জিয়ার খেতাব কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত সরকারের গৃহযুদ্ধের পাঁয়তারা’

বিএনপি, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 00:18:45

সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেওয়া ‘বীর উত্তম’ খেতাব কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) মহান স্বাধীনতার ঘোষক, রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা, জেডফোর্সের অধিনায়ক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে গণমাধ্যম থেকে জানা যায়। সংবাদে আরও বলা হয়, জামুকা’র সভার সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীর সভাপতিত্বে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বীর উত্তম খেতাব দেওয়া হয়। স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর তার রাষ্ট্রীয় খেতাব কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকারের অবিনাশী কুটিল প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের নিষ্ঠুর থাবায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে না পেরে দেশমাতৃকার এই মহান বীরের অবদানকে মুছে ফেলার জন্য ব্যর্থ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই সরকারপ্রধানের পদলেহনকারী কতিপয় ব্যক্তি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের এমনিতেই তালিকা থেকে বাদ দিয়ে এবং নানা ধরনের অপকর্মের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে বিতর্কিত হয়েছেন, সেজন্যই জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন। শহীদ জিয়া, বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানের নামে বিষোদগার করলেই আওয়ামী নেতাদের কবিরা গুণাহ মাফ করে দেন প্রধানমন্ত্রী। এরা তমসাবৃত মোহান্ধ বুদ্ধির উন্মাদ আস্ফালনে লিপ্ত রয়েছে। এরা সহজাত বিচার-বুদ্ধি হারিয়ে ফেলেছে। এদের মনে-মস্তিস্কে অন্ধকার নেমেছে। এরা এক ধরনের প্রতিবন্ধী। এরা কুৎসা সঞ্চারিত মনের বিকারগ্রস্ত ব্যক্তি। এরা প্রধানমন্ত্রীর অসহিষ্ণু মননের বাইপ্রডাক্ট। জিয়া, জিয়া পরিবার এবং জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর লাগামহীন ক্রোধ এবং অন্ধ অসুয়া চরিতার্থ করার এরা হুকুমবরদার।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, যে মহান ব্যক্তি দেশের জন্য অকুতোভয়ে লড়াই করেছেন সেই জিয়াউর রহমানের ন্যায় বীরের খেতাব মাফিয়া রাষ্ট্রশক্তির জোরে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও জনমনে যে ইতিহাস রচিত হয়ে আছে। সেই ইতিহাস অমর, অব্যয়, অক্ষয়, তা রাষ্ট্রযন্ত্রের হুমকিতে কখনো মুছে ফেলা যাবে না। জিয়াউর রহমানের কীর্তি দেশবাসীর অন্তরে আজও অম্লান। জিয়াকে নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আবেগ তা যুগে যুগে মানুষের হৃদয়ে বহমান থাকবে। সূর্যের আলো-কে আটকানো যায় না, এর বিশাল ব্যাপ্তি পৃথিবীসহ সৌরলোকে ছড়িয়ে পড়ে। বীরত্ব শব্দটি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজন হয়, চাকরি রক্ষায় নয় কিংবা প্রমোশন বা ইনক্রিমেন্ট আদায়ের জন্য নয়। শহীদ জিয়া ছিলেন সেই বীর যিনি দেশপ্রেমে পরিপূর্ণ একজন ব্যক্তি। তাই ‘৭১ এ নিজের ও পরিবারের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে রেখে সেই দুঃসময়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বের শূন্যতায় পাকিস্তানি কমান্ডারকে হত্যা করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানিয়েছিলেন জিয়া। তিনি ওই দুর্যোগময় মুহূর্তে কাউকে নাকে তেল দিয়ে ঘুমানোর কথা বলেননি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশে-বিদেশে বর্তমান সরকারের মাফিয়া দুঃশাসনের যে সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে সেটিকে আড়াল করতেই রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের খেতাব কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা বলা হচ্ছে। সরকারের প্ররোচণায় জামুকা জিয়াউর রহমানের খেতাব কেড়ে নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি শেখ হাসিনার আদেশেই করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। খুব দ্রুতই এই সরকারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে। মিথ্যা বলা ও কলঙ্ক রটনাই আওয়ামী লীগের জীবিকা-উপার্জনের একমাত্র উপায়। কারণ এরা জনগণ দ্বারা পরিত্যাজ্য। জিয়াউর রহমানের খেতাব কেড়ে নেওয়া বিএনপিসহ জাতীয়তাবাদী শক্তি রাজপথে সুনামির ন্যায় ধেয়ে এসে প্রতিরোধ করবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর